নরসিংদীর চরাঞ্চলে বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমাণ

Narsingdi uncultivated land pic 04

নরসিংদীর চরাঞ্চলে প্রতি বছরই বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমাণ। খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়াসহ নানা কারণে ফসল আবাদ থেকে সরে যাচ্ছেন কৃষকরা। এতে পতিত পড়ে থাকছে শত শত হেক্টর কৃষি জমি। কৃষি কাজ না থাকায় বাধ্য হয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে ১৬ শ’ হেক্টর কৃষি জমি। এসব জমিতে ধান, মরিচ, আলু, বাদাম, তিল, ভুট্টা, বাঙ্গি, ওস্তে, কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের ভালো ফলন হয়। কিন্তু সার, কীটনাশক ও জ্বালানি তেলসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।  লাভ কম হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা এখন ফসল আবাদ থেকে সরে যাচ্ছেন। এর ফলে পতিত পড়ে আছে চরাঞ্চলের আড়াইশ’ হেক্টর কৃষি জমি। অন্যদিকে কৃষি কাজ ছেড়ে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না কৃষি শ্রমিক। পাওয়া গেলেও মজুরি দিতে হচ্ছে বেশি।

বিভ্ন্নি দিক দিয়ে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ও অব্যাহত লোকসানের কারণে চাষাবাদ না করায় একইভাবে নরসিংদী জেলার আরও ১১টি চরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন বাশঁগাড়ী, মির্জারচর, পাড়াতলী, চাঁনপুর, আলোকবালী, করিমপুর, নজরপুর, শ্রীনগর, চর দীঘলদি, চর মধুয়া ও চর আড়ালিয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে অনাবাদী কৃষি জমির পরিমাণ। 

রায়পুরা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক মোহর আলী জানান, একজনের দেখাদেখি অন্যজনও জমি পতিত রাখায় মাঠ এখন গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হচ্ছে।

একই উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের মো. দুলা মিয়া বলেন, জ্বালানি তেল, সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় এবং  চাহিদা অনুযায়ী কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় শত শত বিঘা জমি পতিত পড়ে আছে।

অপর কৃষক রব মিয়া বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবসহ দীর্ঘদিন ধরে লোকসানের কারণে কৃষিকাজে এখন সবাই অনাগ্রহী। আমি চলতি বছর ১০ হাজার টাকা খরচ করে ওস্তে আবাদ করে বিক্রি করেছি মাত্র ৪ হাজার টাকায়। এভাবে লোকসান দিতে দিতে এখন কৃষি কাজের বিকল্প চিন্তা করছি।

নানা কারণে কৃষকদের ফসল আবাদ থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম হেমায়েত উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জমি যাতে পতিত পড়ে না থাকে সেজন্য বিকল্প পদ্ধতির লাভজনক ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়া সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহী হবেন।

/জেবি/