ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ

Narsingdi Sar karkhana pic 02.04.16

গ্রীষ্মকালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তে শুক্রবার বিকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াশাল সার কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) প্রদীপ কুমার মজুমদার।    

ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, বছরের অধিকাংশ সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কারখানা দুটিকে ব্যাপক লোকসান ও ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। কারখানা দুটির উৎপাদন বিভাগ থেকে জানা যায়, চলতি বছর দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৮ লাখ টন নির্ধারিত হলেও বিসিআইসি তাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১৪.৫৫ লাখ টন। 

কারখানার সিবিএ নেতারা জানান, কবে নাগাদ কারখানা দুটিতে গ্যাস সরবরাহ করা হবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করা হয়নি। কারখানা দুটিতে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ করে উৎপাদন শুরু করা না গেলে চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে। ফলে দেশে ইউরিয়া সারের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ উৎপাদন ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে উচ্চ মূল্যে সার আমদানি করতে হতে পারে। এর ফলে প্রতি টন সার আমদানিতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। এদিকে বছরের অধিকাংশ সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দিনে দিনে অকেজো হয়ে পড়ছে কারখানা দুটির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।

গত বছর ঘোড়াশাল সার কারখানায় প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানার রিয়েক্টর, স্টিপারসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ ঠিক করা হয়।

এ বিষয়ে ঘোড়াশাল সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী অমর কুমার বিশ্বার বলেন, ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা একটি কেপিআই মান-১ বিশিষ্ট উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন কারখানা। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন কারখানার বিভিন্ন মূল্যবান ক্যাটালিস্ট সংরক্ষণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় আর্থিকভাবেও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারখানার গ্যাস প্রত্যাহারের কারণে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় শ্রমিক কর্মচারীরাও কর্মোদ্যম হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এভাবে দীর্ঘদিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে।

তিতাসের ঘোড়াশাল সঞ্চালন ও বিতরণ কার্যালয় সূত্র জানায়, ঘোড়াশাল সার কারখানায় দৈনিক ৪২ মিলিয়ন ঘনফুট ও পলাশ সার কারখানায় ১৩ মিলিয়ন গ্যাসের প্রয়োজন হয়। ঠিক কবে নাগাদ সরকার গ্যাস সরবরাহের অনুমতি দিবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।

/জেবি/