জাতীয় পতাকাতেই জীবিকা রুবেলের

পতাকা বিক্রি করছেন রুবেল ও তার বন্ধু রুহুলসড়ক দুর্ঘটনায় হাত কেটে ফেলতে হয় বাবার। তাই স্কুল ছেড়ে পথে নামতে হয় ফরিদপুরের রুবেলকে (২০)। তার উপার্জিত অর্থেই সংসার চলছে, লেখাপড়া করছে ছোট দুই ভাইবোন। তাই ফরিদপুর থেকে যশোরে এসে বিক্রি করছেন জাতীয় পতাকা, দেশের পতাকাসমৃদ্ধ মাথার ও হাতের ব্যান্ড। যশোর শহরের পরিচিতি রাস্তায় দেখা হয় রুবেলের সঙ্গে।  চলতি পথে তিনি জানান তার জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনী।

ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার হামিদিয়া এলাকার চুন্নু খাঁর ছেলে রুবেল ২০১৫ সালে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। সে বছর তাদের এলাকার ঝাটুকদিয়া বাজারে পিকআপ আর অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হন পরের জমিতে কিষাণ দেওয়া বাবা চুন্নু খাঁ। দুর্ঘটনায় তার বাম হাতটি কেটে ফেলতে হয়। এরপর থেকে তিনি আর কাজ করতে পারেননি। অগত্যা সংসারের হাল ধরতে হয় বড় ছেলে রুবেলকে।

রুবেল বলেন, ছোট বোন রুপালী অষ্টম শ্রেণি আর ভাই রানা পঞ্চম শ্রেণিতে স্থানীয় পুরাদিয়া হাইস্কুলে পড়াশুনা করে। সংসারের খরচ বাদেও বাবার ওষুধ ইত্যাদি সব কিছুই চলে তার উপার্জনে।

Jessore national flag seller 1- 08.12.16তিনি জানান, বছরের এই সময়ে বিশেষ করে ডিসেম্বর মাসে তিনি যশোরে আসেন অপর বন্ধু রুহুল আমিনের পরামর্শে। এই সময়ে জাতীয় পতাকা, ব্যান্ড এসবের বেশ চাহিদা থাকে। লোকজন সেগুলো আগ্রহ ভরে কেনেও।

জাতীয় পতাকা বিক্রির আগে রুবেল এলাকায় পরের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। তাছাড়া ভ্যানও চালিয়েছেন জীবিকার তাগিদে।

রুবেল জানান, তাদের গ্রামের লিয়াকত নামে এক মহাজনের কাছ থেকে ২০ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার শর্তে ১০-১২ হাজার টাকা নেন। সেই টাকা দিয়ে পতাকা, ব্যান্ড ইত্যাদি কিনে যশোরে বিক্রি করছেন।

তিনি জানান, পতাকার সাইজ অনুসারে দাম; সেক্ষেত্রে পতাকার দাম পড়ে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আর ব্যান্ডের দাম ১০ টাকা এবং ছোট হাত পতাকাও ১০ টাকা।

রুবেলের সঙ্গে রয়েছেন তারই বন্ধু রুহুল আমিন। তিনিও একই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তার উপার্জনেও চলে সংসার। তিনি চার বছর ধরে পতাকা ও ব্যান্ড বিক্রির কাজ করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় তিনি পতাকা বিক্রি করছেন।

তিনি জানান, মূলত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করেন। অন্য সময় পরের জমিতে তিনিও কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

আরও পড়ুন:
ঠিকানা তার শহীদ মিনার

/বিটি/