বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দুই বাংলার মিলন মেলা

অস্থায়ী বেদীতে দুই বাংলা প্রতিনিধিদের শ্রদ্ধা নিবেদনআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুই বাংলার হাজারো ভাষাপ্রেমীর পদচারণায় মুখরিত হয় বেনাপোল চেকপোস্টের নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা। ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে শুধু মাতৃভাষার টানে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে দলে দলে মানুষ যোগ দেন একুশের মিলন মেলায়।

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এই সুরে সুর মেলাতে সীমান্তের দুই প্রান্তের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন সেখানে। রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ীক ও সাংস্কৃতিক দল এবং সরকারের প্রতিনিধিরা বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বেনাপোল পৌরসভা ও বনগাঁ পৌরসভা এই মিলন মেলার আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।benapole 21 picture-----2

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদ, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার শওকত হোসেন, জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ন কবীর, যশোর ৪৯ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান ও ইমিগ্রেশন ওসি ইকবাল হাসান। 

দুই বাংলার প্রতিনিধিরা

ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী শ্রী-জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,তথ্য প্রযুক্তি ও দফতর মন্ত্রী শ্রী ব্রাত্য বসু, বনগাঁ লোকসভার সংসদ শ্রীমতি মমতা ঠাকুর,বনগাঁ উত্তর বিধান সভার বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিৎ দাস,বনগাঁ দক্ষিণ বিধান সভার বিধায়ক শ্রী সুরজিৎ কুমার বিশ্বাস। আরও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম বাংলার কবি ও সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, পশ্চিম বাংলার বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী, অর্পণ চক্রবর্তী, বাংলাদেশের বিখ্যাত কবি আসাদ চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী রবীন্দ্রনাথ রায় ও খুরশীদ আলম এবং নাট্যকার ও আবৃত্তিকার জয়ন্ত চট্টপাধ্যায়। নোম্যান্সল্যান্ডে আসা ভাষাপ্রেমীরা

সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বেনাপোল-পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে। তারা একই মঞ্চে গেয়ে শোনান ভাষা শহীদদের স্মরণে বাংলার জয়গান। নেতারা শ্রদ্ধা জানাতে হাতে হাত রেখে ঐক্য প্রকাশ করেন। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে আর মিস্টি বিতরণ করে উভয় দেশের ভাষাপ্রেমীদের বরণ করে নেওয়া হয়। পতাকাও বিনিময় করা হয়। এই অনুষ্ঠানের বাইরেও দুই দেশের সীমান্তসহ আশপাশের এলাকা সাজানো হয় নানা রং এর ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, আর ফুল দিয়ে।বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির শুভেচ্ছা বিনিময়

এদিকে ভাষা দিবসের মিলনমেলায় বিজিবি বিএসএফকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে নেওয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা। সীমান্ত টপকে যাতে কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও বিএসএফ ছিল সর্বদা সতর্কাবস্থায়। অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয় দুই সীমান্তেই।   

/এফএস/

আরও পড়ুন-

যুদ্ধাপরাধে সাজাপ্রাপ্ত গোলাম আযমকে ভাষা সৈনিক স্বীকৃতির দাবি! 

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করার দাবি ওবায়দুল কাদেরের