গোডাউনে বস্তা গুনে ঘাটতি ১৫৬ মেট্রিক টন ইউরিয়া

ঝিনাইদহঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বিসিআইসি’র (বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন) বাফার সার গোডাউনের মজুদ ইউরিয়া সারের ওজন ও বাস্তা গননা শেষে ঘাটতি ধরা পড়েছে ১৫৬ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এ নিয়ে গত আট বছরে ৯১৬ মেট্রিক টন সার গায়েব হলো। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান সারের বস্তা গননা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান জানান, ১ নং গুদামের ৪০টি লট, ২ নং গুদামের ৯টি এবং ৩ নং গুদামের ৯টি লট গণনা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৬ জুন পর্যন্ত এক লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ মেট্রিকটন ইউরিয়া সার কালীগঞ্জ বাফারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওই সময়ে এক লাখ ৪০ হাজার ৯৮১ মেট্রিক টন সার ডিলারদের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হয়। ওপেনিং মজুত ২ হাজার ৩৯৭ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন সহ গুদামের ইউরিয়া সার মজুত থাকার কথা ছিল ৬ হাজার ৯৩৯ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টন। কিন্তু পাওয়া গেছে ৬ হাজার ৭৮২ দশমিক ৬৫ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে মজুদ সারের ঘাটতি রয়েছে ১৫৬ মেট্রিক টন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল করিমও জানান, বাফার গুদামে সারের ঘাটতি রয়েছে। তবে এই ঘাটতির জন্য কে দায়ী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে এড়িয়ে যান তিনি। ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেডের পক্ষ থেকেও প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড ঘোড়াশাল নরসিংদীর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষ থেকে জাকিব করা এক পরিপত্রে জমাট বাধা ৪৫ হাজার ৫৬১ বস্তা মজুত ইউরিয়া রি-ব্যাগিং করার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর স্থানীয় ঠিকাদার ও সারের ডিলার সালাউজ্জামানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ করা হয়েছে যথাসময়ে রি-ব্যাগিং শুরু না করার কারণে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং সার আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতরা নানা অজুহাতে পার পেয়ে গেছেন।

বাফার গোডাউনের বর্তমান ইনচার্জ মাসুদ রানা বলেন, ‘৪০ হাজার ১৭৫ বস্তা ক্রাশিং করে নতুন সার মিশিয়ে ৩৭ হাজার ৩৯ বস্তায় রি-ব্যাগিং করা হয়েছে।’ জমাট বাধা সার রি-ব্যাগিং করার নির্দেশ থাকলেও কেন তা করা হয়নি- এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তিনি। ১৫৬ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের ঘাটতি জন্য সাবেক ইনচার্জ জালাল উদ্দীন দায়ী হবেন বলে দাবি করেন মাসুদ রানা।

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 

পাহাড়ে স্বজনহারাদের আহাজারি আর বেঁচে থাকার লড়াই
দেশে গত ১০ বছরে জ্বরের রেকর্ড