হিজড়া গোষ্ঠীর নেতা আঞ্জুয়ারা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের চোখ না থাকলে অন্ধ হয়, কিন্তু আমাদের চোখ থাকলেও অন্ধ হয়ে থাকতে হয়। এই সমাজে মানুষ হিসেবে আমরা অবহেলিত। সরকারি বিভিন্ন সেবাপ্রদানকারী সংস্থা থেকে কাঙ্ক্ষিত কোনও সুবিধাই আমরা পাই না। পদে পদে লাঞ্ছিত হই, উপহাস করা হয় আমাদের। দেশের নাগরিক হলেও মাথা গোঁজার কোনও ঠাঁই নেই।’ অন্তত থানায় গেলে মামলা কিংবা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবাটুকু যেন দেওয়া হয় সেই দাবি তোলেন তারা।
সভায় প্রধান অতিথি যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফউদ্দিন তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। হিজরাদের আবাসনের জন্যে জায়গার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা সংগঠনের পক্ষে একটি দরখাস্ত দেন, দেখি কতটুকু করা যায়। আমি চেষ্টা করবো, আপনাদের জন্যে একটি নিষ্টণ্টক জমির ব্যবস্থা করার।’ একইসঙ্গে তিনি হিজড়া জনগোষ্ঠীকে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানেরও আশ্বাস দেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘সময় বদলেছে। আগের মতো অবস্থা এখন আর নেই। এখন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। তারা বিউটিফিকেশন, টেইলারিংসহ অন্যান্য কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন।’ বিভিন্ন সংস্থায় এখন নারী গাড়িচালকরা দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যশোর বিআরটিএ-কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখবো। আপনারা যাতে ড্রাইভিং শিখতে পারেন সে ব্যবস্থা করা যায় কিনা।’ তিনি উপস্থিত সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বয়স্ক হিজড়াদের জন্যে বয়স্কভাতাসহ সরকারের অন্যান্য সুবিধা দেওয়ারও অনুরোধ করেন।
সংগঠনের সভাপতি মোসলেম শেখ বাবুর সভাপতিত্বে সভায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও সিভিল সার্জন ডা. দিলিপ কুমার রায়, সমাজেসবা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আশাদুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত, প্রেসক্লাব যশোরের দফতর সম্পাদক তৌহিদ জামান, অ্যাডভোকেট তাহমিদ আকাশ, এডাবের সদস্যসচিব শাহজাহান নান্নু, হিজড়া নেত্রী তাপসী দে, স্বর্ণা সুলতানা প্রমুখ আলোচনা করেন।