মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ডিসেম্বর শাহাবাদ মাজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির তিন বছর মেয়াদি কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ, অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রকাশ ও প্রচার, শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন, দাতা, প্রতিষ্ঠাতা ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য নির্বাচন।
ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, চলতি গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে নতুন কমিটি জমা দিতে হবে। সে হিসেবে মাদ্রাসার নতুন কমিটি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৩ নভেম্বর কিংবা তার আগের যেকোনও তারিখে। কিন্তু মাদ্রাসারা কর্তৃপক্ষ গভর্নিং বডি গঠনের নিয়মনীতি অনুসরণ না করে এখন পর্যন্ত ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন কমিটি জমা দেয়নি।
বর্তমান গভর্নিং বডির একাধিক সদস্য জানান, মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠনের জন্য কোনও নিয়মনীতি মানা হয়নি। মাদ্রাসার প্রকৃত অভিভাবক সদস্যসহ অন্যান্য ক্যাটাগরির সদস্যদের বাদ দিয়ে মাদ্রাসার শীর্ষ পদে থাকা একজন ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষায় নিজেদের পছন্দসই লোকদের নিয়ে অবৈধভাবে কমিটি গঠনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এর পেছনে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ বায়েজীদ হোসাইনের হাত আছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
গভর্নিং বডির সদস্য মো. মোকাররম হোসেন জানান, নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে অবৈধ পথে কমিটি গঠন করে শাহাবাদ মাজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি মহল। মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন নওয়াপাড়ার পীর সাহেবরা। পীর সাহেবদের উপেক্ষা করে মাদ্রাসাটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে মাদ্রাসাটির কার্যক্রম চলছে। অধ্যক্ষ পদে নিজেকে স্থায়ী করতে উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ বায়েজীদ হোসাইন নেপথ্যে থেকে পছন্দমত কমিটির সদস্য নির্বাচনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। উপাধ্যক্ষ বায়েজীদ তিনটি নাশকতা মামলার আসামি এবং এসব মামলায় জেলও খেটেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
শিক্ষক প্রতিনিধি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন না করে গোপনে অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়েছে। তিনি নিয়ম-কানুন মেনে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি জানান।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ বায়েজীদ হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গভর্নিং বডি গঠনের ব্যাপারে আমার কোনও হাত নেই। এটি একটি আন্ডার প্রসেস। আমার পছন্দসই লোকদের কমিটিতে আনার কোনও সুযোগ নেই।পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
গভর্নিং বডি গঠনের জন্য নিযুক্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও বর্তমান কমিটির বিদ্যুৎসাহী প্রতিনিধি সহযোগী অধ্যাপক এম.আব্দুর রহিম জানান, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের ব্যাপারে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। এ সংক্রান্ত কোনও চিঠি তিনি পাননি। সোমবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত গভর্নিং বডি গঠনের ব্যাপারে কোনও কাগজপত্রে তিনি স্বাক্ষর করেননি।
শাহাবাদ মাজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুর রকিব বলেন, ‘গভর্নিং বডি গঠনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও বর্তমান কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর করানো সম্ভব হয়নি। যে কারণে এখন পর্যন্ত কমিটি অনুমোদনের জন্য ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরে নতুন গভর্নিং বডির কাগজপত্র পাঠানো যায়নি।