হুমকির মুখে পটুয়াখালীর বীজ উৎপাদন খামার

পটুয়াখালীর বীজ উৎপাদন খামারপটুয়াখালীর দশমিনার বীজ উৎপাদন খামারটি নদীভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে তেতুলিয়া নদীগর্ভে চলে গেছে খামারের প্রায় চারভাগের একভাগ জমি। বর্ষা মৌসুমে প্রকল্পের আরও জমি নদীগর্ভে বিলীন ও সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ভাঙন ঠেকাতে পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে বলে জানালেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা।

দশমিনা বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক কিশোর কুমার বিশ্বাস জানান, গত বছরের জরিপ অনুযায়ী খামারের ২৫৩ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। খামারটি টিকিয়ে রাখতে হলে টেকসই একটি বাঁধের দরকার। পরিকল্পিতভাবে নদীশাসন ও বেড়ি দিয়ে ভাঙন রোধ করা সম্ভব। অব্যাহত ভাঙন আর চারদিকে বাঁধ না থাকায় ফসল উৎপাদনে বড় অন্তরায় হয়ে পড়েছে। আগে এখানে গম, কালিজিরা, ভুট্টা, তিল, ফেলন, খেসারি, সূর্যমুখী, মুগডালসহ বিভিন্ন ধরনের শস্য আবাদ করা হতো। কিন্তু, পানিতে ডুবে শস্যের ক্ষতির কারণে এবার শুধু এখানে আমন, বোরো ও সরগম চাষ করা হয়েছে।’

পটুয়াখালীর বীজ উৎপাদন খামারের জমি নদীতে বিলীন হচ্ছেসরেজমিন দেখা গেছে, খামারের ১০৪৪.৩৬ একর জমির মধ্যে ২৫৩ একর জমি ধারাবাহিকভাবে তেতুলিয়া গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খামাররের পশ্চিম এবং পূর্বদিক থেকে ভাঙনের তীব্রতা বেশি লক্ষ করা গেছে।

শ্রমিক মো. কামাল জানান, দুই বছর আগে খামারটি আরও বড় ছিল, কিন্তু নদীভাঙনের ফলে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। তাই এই চরে কাজকর্মের পরিমাণও কমে যাচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) উন্নত জাতের বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে পটুয়াখালীর দশমিনার বাঁশবাড়িয়ার তিনটি চর (একত্রে সংযুক্ত চরবাঁশবাড়িয়া, চরবোথাম ও চরহায়দার) নিয়ে বীজ বর্ধন খামারটি প্রতিষ্ঠা করে। ১ হাজার ৪৪ একর জমির ওপর প্রায় ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই  প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রকল্পটির প্রথম মেয়াদ শেষ হয়। দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হয় ২০১৫ সালের জুন মাসে। এরপর একনেকের সিদ্ধান্তে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হলে তা ২০১৭ সালের জুন মাসে ৬৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শেষ হয়। এরপর প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয় বিএডিসি খামারের কাছে।

খামারটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে একটি অফিস ভবন, ৫শ’ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার একটি বীজ গুদাম, একটি কাভার্ড থ্রেসিং ফ্লোর, তিনটি সানিং ফ্লোর, একটি ওয়ার্কশপসহ বায়োগ্যাস প্লান্ট, একটি ক্যাটেল শেড ও ইমপ্লিমেন্ট শেড।