সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কাঁদলেন মুক্তিযোদ্ধা মান্নান

দুই চোখ হারানো মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে অঝোরধারায় কাঁদলেন মুক্তিযুদ্ধে দু’চোখ হারানো মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান। কান্নাভেজা কণ্ঠে বললেন, ‘আমার আসলে আর কিছুই চাওয়া নেই। শুধু মরার আগে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় নিজের নামটি রয়েছে- তা যেন জেনে যেতে পারি। আপনারা যে সম্মান আজ আমাকে দিলেন, তা সারাজীবন স্মরণ করবো।’

শুক্রবার বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানকে ‘সুন্দর বাংলাদেশ চাই ফাউন্ডেশন-এসবিসি’ এই সংবর্ধনা দেয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন। বক্তৃতা করেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মো. মুফাজ্জেল হোসেন ও সাংবাদিক তৌহিদ জামান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আনিসুজ্জামান আরজু।

গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন বলেন, ‘দেশের প্রতিটি অঞ্চলে অনেক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, যাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হয়নি। তাদের জীবনকাহিনীর তথ্য উপাত্ত ঘেঁটে সাংবাদিকরা তা প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, সংগঠন সহযোগিতার হাত বাড়ায়। আজ সুন্দর বাংলাদেশ চাই ফাউন্ডেশনও একই প্রক্রিয়ায় সুবিধাবঞ্চিত সেইসব মুক্তিযোদ্ধা কিংবা অবহেলিত মানুষের কল্যাণে হাত বাড়িয়েছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমরা চাই, এই ধারা অব্যাহত থাকুক। আব্দুল মান্নানের মতো আরও যেসব মহান মুক্তিযোদ্ধা অবহেলার শিকার হয়েছেন, সরকার তাদের প্রকৃত সম্মান দিক এই প্রত্যাশা ও দাবি করছি।’

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানকে সংবর্ধনাঅনুষ্ঠানে অতিথিরা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের হাতে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট এবং ১০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড তুলে দেন। একইসঙ্গে তার নাম যাতে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় সন্নিবেশিত হয়, সেলক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার অঙ্গীকার করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান যশোর সদরের মুন্সেফপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম এই সাহসী যোদ্ধা যখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন, তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় আব্দুল মান্নানের বাবা খুলনায় ইস্টার্ন জুট মিলে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালের জুন মাসে তিনি হঠাৎ করেই বাড়িছাড়া হয়ে যান।