নিহত সৈকত সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা জানান, সৈকতের পাশের দালানের এক ব্যক্তি তার জানালা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে একজনকে ঝুলতে দেখেন। তিনি বিষয়টি আশপাশে জানালে সৈকতের রুমমেট,বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের উপস্থিতিতে দরজার হাতল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা সৈকতকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে উদ্ধার করে সৈকতকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরও জানা যায়,সৈকত দুইবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তার টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায় তিনি সম্প্রতি হতাশার কবল থেকে বাঁচতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।
সম্প্রতি সৈকত নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে হতাশার কথা লিখেছিলেন। তার রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির একটি পাতায় লেখা রয়েছে- ‘‘অনেক স্বপ্ন ছিল চাকরি করবো, মার মুখে হাসি ফোটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল। মার শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনা থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনও উপায় নেই। না আছে টিউশনি যার উপর নির্ভর করে খুলনাতে চলতেছিলাম। কোনও চাকরিতেও ভয় পাচ্ছি। আজ এতো কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেল। আমি শুধু বন্ধুদের কে কী করছে সেই দিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিন জন চাকরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে বিসিএস এর দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে যায়। সে জন্য আমি আরও অ্যাবনর্মাল বিহেভ করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীরটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।’’