এদিকে, এই আসনে মাশরাফির প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এ জেড এম ফরিদুজ্জামানও (ধানের শীষ) বসে নেই। নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনিও নেমে পড়েছেন ভোটের মাঠে। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের নিয়ে চালাচ্ছেন নির্বাচনি প্রচারণা। সব মিলিয়ে নড়াইল-২ আসনে নির্বাচনি উৎসব চলছে।
১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পরই নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগ ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে। মাশরাফি আপাতত খেলায় ব্যস্ত থাকলেও নেতাকর্মীরা আছেন ভোটের মাঠে। এ ক্ষেত্রে ভোটারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের মন্তব্য—খেলার মাঠে মাশরাফি লড়ছেন বাংলাদেশের জন্য, আর হাজারও নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে লড়ছেন মাশরাফির জন্য। মাশরাফি ভক্তরা জানান, মাশরাফি খেলার মাঠে থাকলেও সর্বদা নড়াইলবাসীর হৃদয়ে আছেন।’
মাশরাফির বন্ধু সুমন দাস বলেন, ‘নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মাশরাফির জন্য নির্বাচনি মাঠে নেমেছেন নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৯ সালের এসএসসির বন্ধুরা। পাশাপাশি ১৯৯৮ সালের এসএসসির বন্ধুরাও মাশরাফির জন্য বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে মাশরাফির পক্ষে মতবিনিময়, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ করে চলেছেন তার বন্ধুরা।’ মাশরাফি খেলার মাঠে থাকলেও প্রচার প্রচারণা থেমে নেই বলে জানান তিনি।
মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজা স্বপন বলেন, ‘খেলা শেষ করে এ মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখে নড়াইলে আসতে পারে মাশরাফি। নড়াইলে এসে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। এবার নড়াইলে এসে বেশ কয়েকদিন থাকাবে সে।’
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষ মাশরাফির নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘মাশরাফি নির্বাচনে জয়লাভ করলে অবহেলিত নড়াইলের সার্বিক উন্নয়ন হবে।’
এই আসনে আওয়ামী লীগ ও ২০ দলীয় জোট তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছাড়াও আরও পাঁচজন প্রার্থী বিভিন্ন দলের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে জেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সভাপতি অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ (লাঙ্গল), এনপিপির (ছালু) জেলা সভাপতি মনিরুল ইসলাম (আম), ইসলামী আন্দোলনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম নাসির উদ্দীন (হাতপাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান (মিনার) ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফকির শওকত আলী (তারা) নির্বাচন করছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইলের এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ বরাবরই ভালো ফলাফল করেছে। এই আসনে ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক জয়লাভ করে। ২০১৪ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন ওয়ার্কাস পার্টির নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি এবং ১৯৭৯ ও ২০০১ সালের উপনির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে।