কুষ্টিয়ায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি





ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কলা বাগানকুষ্টিয়ায় রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে প্রবল শিলাবৃষ্টি ও ঝড় হয়েছে। এতে ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস, স্থানীয় কৃষক ও সরেজমিন ঘুরে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে সদর উপজেলায় ৬২০ হেক্টর জমির ভুট্টা, ১০ হেক্টর রসুন, ৫০ হেক্টর গম, ১০০ হেক্টর মসুর, ৪০ হেক্টর খেসারি, পাঁচ হেক্টর কলা বাগান ও পাঁচ হেক্টর পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে। মিরপুর উপজেলায় ৫০০ হেক্টর তামাক, ৩০ হেক্টর ভুট্টা, চার হেক্টর রসুন, ২৬ হেক্টর গম, ২২ হেক্টর মসুর, দুই হেক্টর কলা বাগানের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া কুমারখালী উপজেলায় ২১ হেক্টর ভুট্টা, ৪০ হেক্টর রসুন, ৪৫ হেক্টর গম, ৪০ হেক্টর মসুর ও ১২ হেক্টর সবজির ক্ষতি হয়েছে।

শিলাসদর উপজেলার কৃষক অপন মাহমুদ বলেন, ‘শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে উঠতি রবি শস্যসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমার দেড়বিঘা মসুর, আট কাঠা কলা বাগান ও তিন কাঠা পেঁপে বাগান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।’

কবুরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করি। যার পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।’

ভেঙে পড়া পেঁপে গাছ ধরে দাঁড়িয়ে কৃষকমিরপুর উপজেলার কাকিলাদহ এলাকার মল্লিক পাড়ার কৃষক আবু বক্কর বলেন, ‘এ বছর আমি বর্গা নিয়ে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে তামাকের চাষ করেছি। ক্ষেতে তামাকের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন বাড়িতে এনে শুকিয়ে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে সব তামাক নষ্ট হয়ে গেছে।’

একই এলাকার কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আট বিঘা জমিতে তামাকের চাষ করেছি। তার পুরোটারই ক্ষতি হয়েছে।’

শিলাআবুরী মাগুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘শিলার আঘাতে আমার প্রতিষ্ঠানের টিন শেডের শ্রেণিকক্ষের চালা ফুটো হয়ে গেছে। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে চারশ শিক্ষার্থী রয়েছে। বৃষ্টি হলে এখন এরা ক্লাস করতে পারবে না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভুতি ভূষণ সরকার বলেন, ‘শিলা বৃষ্টিতে খাদ্যশস্য ক্ষতির বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন অফিসে জানাবো। সরকারি কোনও সহযোগিতা আসলে কৃষকদের তা দেওয়া হবে।’

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘কৃষকদের তামাকের ক্ষতিটা বেশি হয়েছে। পরবর্তী মৌসুমে তামাকের পরিবর্তে মসুর, ভুট্টা, গম, পেঁয়াজ, রসুন ও ধান চাষ করলে কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।