পুরনো হলেও শক্তিশালী ছিল পাইকগাছার সেই গ্রেনেডগুলো

পাইকগাছায় ৩২টি গ্রেনেড ধ্বংস করে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ টিমখুলনার পাইকগাছা উপজেলায় চিংড়ি ঘেরের মাটি খননকালে উদ্ধার হওয়া ৩২টি গ্রেনেড পুরনো ও মরিচা ধরা হলেও বেশ শক্তিশালী ছিল। রবিবার রাতে সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞ দল  পাইকগাছার ঘেরেই বিষ্ফোরণের মাধ্যমে গ্রেনেডগুলো ধ্বংস করেছেন। এ সময় বেশ জোড়ালো শব্দ হয়েছে।

যশোর সেনানিবাসের জিওসি ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আশফাক মো. শিবলি বলেন, ‘গ্রেনেডগুলো বেশ পুরনো ও মরিচা পড়া ছিল। কিন্তু কার্যকর ছিল। বেশ শক্তিশালীও। গ্রেনেডের সব ন্যাচারগুলো বিদ্যমান ছিল। বিশেষজ্ঞ দল একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গ্রেনেডগুলো ধ্বংস করেছেন। এগুলো সবই বিদেশি। এ ধরনের গ্রেনেড যুগোস্লাভিয়া, রাশিয়াসহ ওই অঞ্চলে তৈরি হয়ে থাকে।’পাইকগাছায় ৩২টি গ্রেনেড ধ্বংস করে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ টিম

ঘটনাস্থল ভিলেজ পাইকগাছা গ্রামের বাসিন্দা শাহীন সানা বলেন, ‘নিরাপত্তার সঙ্গে গ্রেনেডগুলো বিষ্ফোরণ ঘটানো হলেও বেশ শব্দ হয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে বোঝা গেছে এগুলো মরিচা পড়া হলেও বেশ শক্তিশালী ছিল।’

যশোর সেনানিবাসের জিওসি ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আশফাক মো. শিবলি পিএসসি’র নেতৃত্বে বোমা বিশেষজ্ঞ টিম রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় খুলনার ভিলেজ পাইকগাছার চিংড়ী ঘেরে পৌঁছান। তারা ওই এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন এবং সেখানে পাওয়া ৩২টি হ্যান্ড গ্রেনেড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এরপর তা ধ্বংস করেন। রাত ১০টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত এগুলো পর্যায়ক্রমে বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়। এ সময় ভিলেজ পাইকগাছা ছাড়াও সোলাদানা, গড়ইখালী, গদাইপুরসহ আশপাশ এলাকার মানুষ বিষ্ফোরণের শব্দ পায়।পাইকগাছায় উদ্ধার করা গ্রেনেড

পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক শেখ জানান, ‘গ্রেনেডগুলো ধ্বংস করার সময় বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে। গ্রেনেডগুলো মরিচা পড়া হলেও সক্রিয় ছিল।’

ওসি আরও জানান, ‘শ্রমিকরা রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে চিংড়ি ঘেরের বাঁধ দেওয়ার জন্য মাটি কাটতে শুরু করে। এক সময় মাটির ১০ ইঞ্চি থেকে ১ ফুট নিচে পুরাতন একটি কাঠের বাক্সের সন্ধান পায়। পরে ওই বাক্স খুলে ৩২টি গ্রেনেড দেখতে পায়। মাটি চাপা থাকা গ্রেনেডগুলোতে মরিচা ধরা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গ্রেনেডগুলো এখানে পুঁতে রাখা হয়েছিল। থানার এসআই আবুল বাসার ও লিয়াকত আলী ঘটনাস্থলে পৌছে গ্রেনেডগুলো জব্দ করেন। এরপর দুপুরে র‍্যাব-৬ এর বোমা নিস্ক্রীয়কারী টিম ঘটনাস্থলে যায় এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে না পেরে ফিরে আসে। সন্ধ্যায় যশোর ক্যান্টনমেন্টের জিওসি-৫৫ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আশরাফের নেতৃত্বে বোমা বিশেষজ্ঞ টিম পাইকগাছার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তারা রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।’

আরও পড়ুন- 

ঘেরের মাটি কাটতে গিয়ে মিললো ৩২ গ্রেনেড


পাইকগাছায় পাওয়া ৩২ গ্রেনেড ধ্বংস