দামুড়হুদায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফাটল, ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

 

কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ভবনের ছাদের প্লাস্টার ধসে বেরিয়ে পড়েছে রড, দেয়ালে ফাটল; যেকোনও সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবুও এই ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে পড়ানো হচ্ছে ২১৬ শিশুকে। এমন অবস্থা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানিয়ে আসা হলেও, কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গাছের ছায়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছেবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভবনের এই নাজুক অবস্থা। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের সামনে গাছের ছায়ায় শিশুদের পড়ানো হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু সেদিক থেকে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ছাদের প্লাস্টার ধসে গেছেবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা খাতুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৯৯৪ সালে নির্মিত এই ভবনের দেওয়ালের চারিদিকে ফাটল ও ছাদের প্লাস্টার ধসে রড বেরিয়ে এসেছে। একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ রসে বৃষ্টির পানি পড়তে থাকে। গাছের ছায়ায় ছেলে-মেয়েদের পড়াতে হয়। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শুষ্ক মৌসুমে কোনও মতে পাঠদান চালিয়ে নেওয়া গেলেও বর্ষা শুরুর আগে নতুন ভবন নির্মাণ বা সংস্কার করা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে পাঠদান।’

স্কুল ভবনের বারান্দায় পাঠদান চলছে প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে ২১৬ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এসব শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচটি কক্ষ প্রয়োজন, কিন্তু সেখানে মাত্র ৩টি কক্ষ রয়েছে। অফিস কক্ষ রয়েছে একটি। দুটি টয়লেট থাকলেও তা জরাজীর্ণ। ব্যবহারের অনুপযোগী এই টয়লেট শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।’ সংশ্লিষ্ট বিভাগে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দামুড়হুদা উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি ছাম জানান, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ না, তবে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। আমরা ভবন মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দুই লাখ টাকা চেয়ে আবেদন পাঠিয়েছি। আশা করি, দ্রুতই বিদ্যালয়টি সংস্কার করা হবে।’

ছাদের প্লাস্টার ধসে গেছেস্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউনুছ আলী জানান, ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও উন্নয়নের কোনও ছোয়া লাগেনি। বিদ্যালয়টিতে কোনও বাউন্ডারি প্রাচীর নেই, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ক্লাসরুম নেই, দুটি টয়লেট রয়েছে, যা ব্যবহারের অনুপযোগী।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জেলার কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেই। কয়েকটি ভবনের অবস্থা নজুক হয়েছে, যেগুলোর সংস্কার কাজ চলছে। আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলে খোঁজ নিচ্ছি, যদি ঝুঁকিপূর্ণ কোনও ভবনের সন্ধান পাই, অবশ্যয় সেগুলোর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’