ঈদের পর আজ রাজারহাটে বসেছে চামড়ার তৃতীয় হাট। যশোর ছাড়াও খুলনার বিভাগের ১০ জেলার ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী ও নাটোরের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এই হাটে চামড়া এনেছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে না পারায় তারা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে চামড়া ব্যবসায়ীরা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
হাটে ৪০০ পিস গরুর চামড়া এনেছেন গোপালগঞ্জের ব্যবসায়ী সঞ্জয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক কম দামেই চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। হাটে দাম বলা হচ্ছে প্রতি ফুট ২০ থেকে ৩০ টাকা। আমার কেনা চামড়ার এখন যে দাম বলা হচ্ছে, তাতে হাটে বসেই প্রায় ৪০ হাজার টাকা ক্ষতি হবে।’
খুলনার বটিয়াঘাটা থেকে আসা ব্যবসায়ী শঙ্কর দাস বলেন, ‘দাম বাড়ার খবর কেবল টিভিতেই দেখি আর শুনি। হাটে এসে চিৎ হয়ে পড়ছি দাম শুনে। এখন দেখছি, চামড়া ফ্রি দেওয়া লাগবে।’ এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
তবে ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এসব দাবি নাকচ করে দেন ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধিরা। সুপার এস লেদারের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত হাটের চেয়ে আজকের হাটে চামড়ার দাম প্রায় দ্বিগুণ। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম খুবই কম। আমরা বিক্রি করছি ৬০ সেন্ট থেকে এক ডলারে। এ ক্ষেত্রে প্রসেসিং করতে আমাদের ৬০ টাকার বেশি খরচ হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় এই হাটে চামড়া কেনার সাহস পাচ্ছি না।’
তবে যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুলের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ করা গেছে। চামড়ার বাজার ফের চাঙা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে আজ তৃতীয় হাটে প্রচুর চামড়া উঠেছে। যেসব ব্যবসায়ী মজুত রেখেছিলেন, তারাও হাটে চামড়া এনেছেন।’ তিনি বলেন, ‘কাঁচা চামড়ার ওপর সরকার নীতিমালা তৈরি করেছেন। ট্যানারি মালিকদের কাছের বকেয়া টাকা আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে সমাধানের বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের নগদ টাকার যে সংকট ছিল, তার সমাধান হবে এবং তারা প্রচুর চামড়া কিনতে পারবেন।’