করোনায় ঘরে থাকার নির্দেশ উপেক্ষিত যশোরে

বাজারে মানুষের ভিড়করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সতর্কতা হিসেবে সবাইকে বাড়িতে থাকতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্টো চিত্র দেখা গেছে যশোর শহরে। বাজারগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। কয়েকটি রাস্তায় দেখা গেছে মানুষের জটলা। সবাই বলছে তারা জরুরি কাজে বাড়ির বাইরে বের হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। এদিকে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন আজই সর্বশেষ সতর্কতা জানানো হচ্ছে। কাল থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই সতর্কতা জানিয়ে মসজিদে মাইকিংও করা হয়েছে।

যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরে থাকার নির্দেশনা না মানলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে প্রচার করতে বলা হয়েছে। সে মোতাবেক সকালে মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ ঘরের বাইরে না বের হন, তার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে মহল্লার মুদি ও ওষুধের দোকান বাদে সব দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’

রাস্তায় বের হওয়া সাইদ হোসেন নামে একজন বলেন, ‘এক সপ্তাহ পর শহর দেখতে বের হলাম। সবাইতো বের হচ্ছে। শহরের চিত্র দেখে বোঝা যাচ্ছে না যে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। শহরের কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধা চোখে পড়েনি।’

আব্দুস সালাম নামে অপর একজন বলেন, ‘একটু মরিচ কিনতে বের হয়েছি। আর গ্যারেজটার কী অবস্থা দেখে এখনই চলে যাবো।’

শহরের একটি রাস্তাশারমিন নাহার নামে এক ইজিবাইক যাত্রী বলেন, ‘ঘরেই তো ছিলাম। টাকা ওঠাতে ব্যাংকে যাচ্ছি। টাকা না উঠালে খাবো কী। তবে, শহরে চিত্র দেখে মনে হচ্ছে- সবসময়ই বের হওয়া যাবে।’

রাশেদ ইসলাম নামে অপর এক ইজিবাইক যাত্রী বলেন, ‘দোকান এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ। দোকানের চারপাশে ময়লা জমে গেছে পরিষ্কার করতে যাচ্ছি।’

এদিকে জনগণকে ঘরে ফেরাতে শহরের কোথাও কোথাও ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশ টহল দেখা গেছে। তারা প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে ঘরে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছেন। ফুটপাথের খোলা দোকানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

যশোর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ এনামুল হক বলেন, ‘সবাইকে ঘরে ফিরতে আহ্বান জানাচ্ছি। আজ সর্বশেষ সর্তকতা করা হচ্ছে। না মানলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

জেলায় কর্মরত সেনা দলের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল নেয়ামুল বলেন, ‘সকাল থেকে যশোর শহরসহ সকল উপজেলায় সেনা টহল অব্যাহত রয়েছে। ঘরে থাকার নির্দেশনা না মানলে কঠোর হতে বলা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে জনগণকে ঘরে থাকতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়। এখন পর্যন্ত দেশে ছয় জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।