আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপসহ খুলনা শহরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুর থেকে খুলনায় থেমে থেমে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে পড়েন উপজেলার বাসিন্দারা।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বাড়বে।
হরিণখোলা আব্দুল হাকিম শেখ বলেন, ‘চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। সত্যি সত্যি যদি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তবে পুরো এলাকা ভেসে যাবে।'
হরিণখোলা এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডে ১৩-১৪/২ পোল্ডারের আওতায়। ১১ বছর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলায় এখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সে স্মৃতি এখনও মানুষের মনে গেঁথে আছে। তাই প্রত্যেকে আতঙ্কের মধ্য আছেন।
ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা, খাসিটানা, জোড়শিং, মাটিয়াভাঙ্গ; উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরি, গাববুনিয়া, গাজিপাড়া, কাটকাটা; কয়রা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর কয়রা, ৪ নম্বর কয়রার পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালি, হরিণখোলা; মহারাজপুর ইউনিয়নের উত্তর মঠবাড়ি, দশালিয়া, লোকা এবং মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ি, নয়ানি, শেখেরটেকের বেড়িবাঁধ এলাকা।
কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, 'আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতকর্তামূলত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ১২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। কয়রা উপজেলা জুড়ে ১১৬টি সাইক্লোন শেল্টার, বিভিন্ন বিদ্যালয়ভবনসহ পাকা ও নিরাপদ স্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়ের জন্য। পাশাপাশি সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাদ্য মজুত করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়রার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১৩ হাজার বাসিন্দাকে নেওয়া হয়েছে। পরে অন্যরাও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেবেন।'