এদিকে উপকূলীয় এলাকায় মাঝে মাঝে বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া বইছে। ভোর রাত থেকে উপকূলীয় শ্যামনগর এলাকা পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মানুষদেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন সূত্র।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সি পি পি, সিডিও-এর সহায়তা নিয়ে মাইকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য। শ্যামনগর উপজেলাকে ঘিরে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫ ও ১৫ নম্বার পোল্ডারের ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে সাতক্ষীরায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করছে। এটি ১৭ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলিমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২২০ কিলোমিটার। সাতক্ষীরার উপকূল অঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে ১০ থেকে ১৫ ফিট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪১ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘জোয়ারের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব এলাকায় বেড়িবাধের সমস্যা সেখানে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার ভাটার তুলনায় পানি তিন থেকে চার ফিট বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢেউও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলো মেরামতের জন্য জিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
সাতক্ষীরা শ্যানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্তা আনম আবুজর গিফারী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। আমাদের ১২টি স্বেচ্ছাসেবক টিমের চার হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এছাড়া পুলিশ, নৌবাহিনী, বিজিবি, গ্রাম পুলিশ মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার ৯০ হাজার ৫০০ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ১২টি মেডিক্যাল টিম ও উপজেলায় একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।’