খুলনা কারাগারে হাজতির করোনা শনাক্ত

করোনা ভাইরাসখুলনা কারাগারে একজন হাজতির দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মাহমুদ নামের এই হাজতি আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর এএসআই হিসেবে ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হলে তাকে গত ১৯ মে খুলনা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

খুলনা কারাগারে আনার আগেই ঢাকা থেকে আসায় তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা শেষে ২২ মে রাতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব থেকে জানানো হয় তিনি করোনা পজিটিভ। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে রয়েছেন।

খুলনার ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

এদিকে, খুলনা কারাগারে হাজতি পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর তার সংস্পর্শে আসা দুই জন ওসি ও চার জন এসআইসহ ২৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। 

খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহম্মেদ জানান, শুক্রবারের রিপোর্টে ওই হাজতির করোনা পজিটিভ জানার পরই তার সংস্পর্শে আসা সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে শুক্রবার একদিনে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে খুলনা জেলার নমুনা ৮৮টি; এতে চার জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এছাড়া বাকি টেস্টে আরও আট জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে বাগেরহাটের ৬ জন ও সাতক্ষীরার দুই জন বাসিন্দা রয়েছেন।

সিভিল সার্জন বলেন, 'খুলনার চার জনের পজিটিভ এর মধ্যে খুলনা সদর হাসপাতালের ফ্লু কর্নারের ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট রায়হানও রেয়েছেন। তাকে রাতেই করোনা ডেটিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা হচ্ছেন—ফুলতলার পুলিশ সদস্য মাহমুদ, স্টার জুট মিলের শ্রমিক পারভেজ কবির এবং সেনহাটি এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম।’

তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ইউএনও এর কাছে আক্রান্তদের বাড়িগুলো লকডাউনের জন্য নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। করোনা হাসপাতালে বর্তমানে রায়হানসহ দুই জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।

সিভিল সার্জন আরও জানান, এ পর্যন্ত মোট ল্যাবে টেস্ট করা হয়েছে পাঁচ হাজার ২০ জনের। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে ১০৭ জনের।

 খুলনা কারাগারের সুপার ওমর ফারুক বলেন, '১৯ মে মাহমুদকে একটি মামলায় এ কারাগারে আনা হয়। করোনা পজিটিভ হওয়ার তথ্য পাওয়ার পরই  হাজতিকে শুক্রবার বিকালে কারাগার থেকে বের করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই তাকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।'

তিনি জানান, এ কারাগারে নতুন আসামি আসার পরেই পৃথক ওয়ার্ডে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। মাহমুদও সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল। এর ফলে কারাগারের অন্য কারও সংস্পর্শে আসার কোনও সুযোগ নেই।

জানা যায়, খুলনার ফুলতলায় অবস্থানরত ওই হাজতির তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর গোপন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আদালতে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে খুলনায় এসে মামলার বাদী তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে মারধর করলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।