৪ হাত জমি নিয়ে বিরোধ, হামলার ভয়ে বাড়িতে পাহারাদার!

বাড়িতে থাকা পাহারাদার



মাত্র চার হাত জমি নিয়ে ভাই ও ভাইপোদের সঙ্গে চলছে বিরোধ। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধে সংঘর্ষও হয়েছে। আবার হামলা হতে পারে এ ভয়ে বাড়িতে একজন পাহারাদার নিয়োগ দিয়েছেন শেখ মাহাবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া রোহিতা গ্রামে।

মাহাবুরের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের কারণে আপন ভাই ও ভাইপোদের হামলার ভয়ে তিনি বাড়িতে এই পাহারাদার রেখেছেন। দেড় হাজার টাকা বেতনে গত দুই মাস ধরে মদন শেখ নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে তার বাড়িতে পাহারার ব্যবস্থা করেন।
তিনি জানান, ২৩ বছর আগে তিনি মায়ের কাছ থেকে তিন শতক জমি কেনেন। হঠাৎ মায়ের মৃত্যুতে তিনি জমিটি নিজের নামে দলিল করাতে পারেননি। এরপর ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পাঁচ জন তাকে সেই জমি ছেড়ে দেন। সেজো ভাই মুজিবর রহমান নিজের অংশ বুঝে নেন। এরপর মুজিবর তার ছেলে মেহেদী হাসেনের নামে গোপনে মাহাবুরের ভিটার অংশ থেকে তিন শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। এই নিয়ে মুজিবর ও মাহাবুরের দ্বন্দ্ব। যার জের ধরে দু’মাস আগে সংঘর্ষও হয়। ওই সময় মুজিবরের করা মামলায় মাহাবুর জেলও খাটেন।
তিনি বলেন, ‘জেল থেকে আসার পর আমাদের নানা হুমকি দিয়ে আসছেন মুজিবর ও তার তিন ছেলে সোহাগ হাসান, মেহেদী হাসান ও জাহিদ হাসান। স্ত্রী সুফিয়া খাতুন এবং তিন মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যেকোনও সময় হামলা হতে পারে–সেই ভয়ে একজনকে রাতে পাহারাদার নিয়োগ করেছি।’

মুজিবর শেখের দাবি, ‘জমি নিয়ে বিরোধে মাহাবুর ও তার মেয়েরা আমার স্ত্রী ও ছেলে মেহেদীকে মারধর করে। তাই নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে। আমরা কাউকে হুমকি দিচ্ছিনে।’
এ বিষয়ে রোহিতা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহিতুল ইসলাম বলেন, মাহাবুরের বাড়িতে একজনকে পাহারায় দেখেছি। ৪ হাত জমি নিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্ব। কিন্তু দু’জনের কেউই ছাড় দিতে চায় না। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। পুলিশ এসেছিল তদন্তে। তারা বলে গেছে মীমাংসা করতে। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) বিকালে এ নিয়ে সালিশের আয়োজন করা হয়েছে। 
মণিরামপুর থানার ওসি শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে আমরা গিয়েছিলাম। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্যদের অবহিত করে মীমাংসার ব্যবস্থা করতে বলেছি। তারা ব্যর্থ হলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি অবহিত। মঙ্গলবার যশোর-৬ আসনে উপনির্বাচন। দায়িত্ব থাকায় এই সমস্যার সমাধানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তবে খুব শিগগির বিষয়টি সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।