নিহতরা হলেন-নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী এলাকার মৃত সানাউল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে প্রকৌশলী হিরোক ভূঁইয়া (৩৪), মেয়ে শিল্পী খানম (৩২), হিরোক ভূঁইয়ার ভাই রনির মেয়ে রাইসা (৮) এবং রুপগঞ্জ-কুড়িগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হিরোক ভূঁইয়ার বন্ধু আশরাফুল ইসলাম (৪২)।
এ ঘটনায় নিহত হিরোকের স্ত্রী শাওন ও এক বছরের মেয়ে হুমায়রা গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত প্রকৌশলী হিরোক ভূঁইয়া, বোন শিল্পী খানম ও ভাইয়ের মেয়ে রাইসার লাশ নড়াইলের বাসায় পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনরা বলতে থাকেন এ পরিবারের উপার্জনক্ষম এবং আপন বলতে আর কেউ থাকলো না। কয়েক বছর আগে হিরোক ভূঁইয়ার মা, বাবা উপ-সহকারি ভূমি সহকারি কর্মকর্তা সানাউল্লাহ ভূঁইয়া মারা যান। তারপর মারা যান হিরোক ভূঁইয়ার বড় দুই ভাই। প্রকৌশলী হিরোকের বেতনের টাকায় তার স্ত্রী, মেয়ে, বোন, ভাবী, ভাইয়ের দুই মেয়ের খরচসহ সংসারের ব্যয় মেটানো হতো। অপরদিকে হিরোক ভূঁইয়ার বন্ধু আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে তার তিন শিশু মেয়ে এবং স্ত্রীর চোখে নেমে এনেছে অন্ধকার।
নিহত হিরোক ভূঁইয়ার বোনের মেয়ে (ভাগ্নি) মীম খানম জানান, মামার পরিবারের পাঁচ সদস্য এবং এক বন্ধুকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে শুক্রবার বেলা পৌনে ৪টার দিকে নড়াইল থেকে নিজের প্রাইভেটকারে করে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পরে সন্ধ্যায় শুনতে পাই নওয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মামা, খালা, মামাতো বোন এবং মামার এক বন্ধু মারা গেছেন।
নওয়াপাড়া রেল স্টেশন মাষ্টার মহসীন রেজা জানান, বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মহানন্দা ট্রেনটি খুলনার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় নওয়াপাড়া রেল ক্রসিংয়ে প্রাইভেটকার ও ট্রেনের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাইভেটকার ও ট্রেনের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা গেছে। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার আরেক জনকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাইভেটকারের ছয় যাত্রীর মধ্যে চার জনই মারা গেছেন। আহত দুই জনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।