ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে সরকারি খাল ভরাট

বালু ফেলে খাল ভরাট করা হয়েছেপশুর নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু তুলে খুলনার দাকোপ উপজেলার একটি সরকারি খাল ভরাটের অভিযোগ উঠেছে “গ্রিন এলপিজি” নামের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। কোম্পানিটি নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে ওই খাল ভরাট করেছে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির কোনও কর্মকর্তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিকে তোয়াক্কা করেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “‘‌গ্রিন এলপিজি”র স্থানীয় কর্মকর্তাদের নিষেধ করার পরও তারা ড্রেজিংয়ের বালু দিয়ে আমতলা সরকারি খালটি ভরাট করে ফেলেছে।’

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকার যেখানে খাল খনন করছে, সেই মুহূর্তে গ্যাস কোম্পানি উদ্দেশ্যমূলকভাবে খাল ভরাট করছে। এটা পরিবেশ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর। তাই এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, “গ্রিন এলপিজি”র নিজস্ব জেটি ড্রেজিং করে পশুর নদীর বালু এক জায়গায় ডাম্পিং (স্তুপ) না করে সরাসরি পাইপ দিয়ে পাশেই খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের আমতলা সরকারি খালে ফেলে ভরাট করে ফেলছে।

বালু ফেলে খাল ভরাট করা হয়েছেস্থানীয় বাসিন্দা রনি মণ্ডল, উত্তম কুমার ও পুষ্পিতা রায় সাংবাদিকদের বলেন, গত সপ্তহেও প্রবহমান এই খাল দিয়ে আমরা নৌকায় করে ক্ষেতের ধান নিয়ে আসি। এখন খালটি বন্ধ হওয়ায় শত শত মণ ধান জমিতেই পড়ে আছে। এছাড়াও এখন এই খালের পানি না থাকায় নানা রকম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের।

এ প্রসঙ্গে দাকোপ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল ওদুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আগেই কিছুই জানতাম না। তবে সরকারি খাল ভরাটের দায়ে গ্রিন  এলপিজি কোম্পনির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বানিশান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় বলেন, ‘ওই কোম্পানিতে কিছু খামখেয়ালি কর্মকর্তা রয়েছেন, তারা আমার কোনও কথাই শোনেননি। আমি তাদের একাধিকবার অনুরোধ করেছি খাল ভরাট না করতে। তারপরও তারা তাদের ড্রেজিংয়ের বালু দিয়ে প্রায় ৩শ’ ফুট খাল ভরাট করে স্থানীয়দের ভোগান্তিতে ফেলেছেন।’ 

এদিকে “গ্রিন এলপিজি” কোম্পানির স্থানীয় সিভিল প্রকৌশলী আশিষ রায় বলেন, ‘ভুলবশত বালু খালে পড়ে ভরাট হয়েছে। এখন আমরা এই বালু অপসরণ করার ব্যবস্থা করছি।’

কোম্পনিটির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিস এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি এ ব্যাপারে হেড অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন।