সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সবার মাস্ক পরিধানে বাধ্যকরণে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে।
গত ৮ নভেম্বর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ও জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকের পর থেকে নড়েচরে বসে খুলনা জেলা প্রশাসন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৯ নভেম্বর থেকে নিয়মিত মামলা, আটক, অর্থদণ্ড, মাস্ক বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা জেলাপ্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) দেবাশীষ বসাক বলেন, ‘করোনার প্রকোপ আবারও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। অথচ জনসচেতন নেই। এ কারণে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে খুলনা জেলা প্রশাসন জিরো টলারেন্সে রয়েছে। কাউকে কোনও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।’
এছাড়া উপজেলাসমূহে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ অভিযানকালে মাস্ক সঙ্গে না থাকায় ৩৯ জনকে ১৮ হাজার ৮০০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
গত ২২ নভেম্বর অভিযানে ১৮ জনকে আটক করা হয়। পাশাপশি ১৯ জনকে মামলার মাধ্যমে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। ২১ নভেম্বর অভিযানকালে মাস্ক সঙ্গে না থাকায় এবং যথাযথভাবে মাস্ক পরিধান না করায় ৭ জনকে ৩ হাজার ৫৫০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮’ এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক এসব জরিমানা করা হয়। অভিযানে সহযোগিতা করেন খুলনা সদর থানা পুলিশ এবং উপজেলাসমূহের স্ব-স্ব থানা পুলিশের সদস্য।
বাসযাত্রী রাসেল শিকদার বলেন, ‘মনে ছিল না। তাই একদিন মাস্ক ছাড়া বের হই। জরিমানাও হয়। মাস্ক ব্যবহার করাই ভালো। ভবিষ্যতে ভুল হবে না।’
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলী বলেন, ‘মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।’
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক জানান, ২১ নভেম্বর অভিযানকালে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাস্কবিহীন অসংখ্য মানুষকে চলাফেরা করতে দেখেন। এ সব মানুষের কিছু সংখ্যক আর্থিকভাবে সচ্ছল, অথচ মাস্ক পরিধান করেন না। কিছু মানুষ আছেন যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধানের নিমিত্তে নিয়মিত মাস্ক ক্রয়ের ক্ষমতা রাখেন না। এ রকম পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন, খুলনা এক অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। সচ্ছল অথচ মাস্ক পরার বিধান অমান্যকারী ব্যক্তিদের জরিমানা আরোপ না করে সেই অর্থে মাস্ক ক্রয় করে গরিব-দুঃখী মানুষকে বিতরণ করতে বলা হয়। আইন অমান্যকারী সচ্ছল ব্যক্তিরা নিজ অর্থে মাস্ক ক্রয় করে রিকশাচালক, দিনমজুর, ভিক্ষুকসহ অসহায় গরিব মানুষকে বিতরণ করেন। এছাড়াও অপ্রাপ্ত বয়স্ক আইন অমান্যকারীর অভিভাবকদের ফোন করে তার পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে এবং মাস্ক পরিধান ব্যতীত বাড়ির বাইরে বের না হওয়া নিশ্চিত করতে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।