ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ১৫ দিনের সন্তানকে হত্যা করে বাবা-মা!

ফাতেমা ও সোহাগ


জন্ডিস, রিকেট, নিউমোনিয়া, হার্টের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছিল ১৫ দিনের শিশু সোহান। তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নবজাতক ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বাবা-মা। এরপর শিশু চুরির নাটক সাজিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পরে এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন ও মা ফাতেমা খাতুনকে।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাওয়ালখালি গ্রামে তাদের বাড়ির সামনের সেফটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাহ উদ্দীন জানান, পুলিশ এ ঘটনায় শিশুটির মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, যে শিশুটি খুবই অসুস্থ ছিল। সে জন্ডিস, রিকেট, নিউমোনিয়া, হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিল। এসব কারণে ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনের শিশু হত্যা এবং মরদেহ গুমের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
তিনি আরও জানান, শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেন শিশুটিকে মেরে তাদের বাড়ির সামনের সেফটিক ট্যাংকির ভেতরে মরদেহটি ফেলে দেয়। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে স্ত্রী ফাতেমা খাতুন। পুলিশ বিষয়টি জানার পর শুক্রবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিস্তারিত পরে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানাবেন বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান।
পুলিশ আরও জানায়, দু’বছর আগে ফাতেমার সঙ্গে কলারোয়া উপজেলার সাহাপুর গ্রামের সোহাগ হোসেনের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন থাকার পর পারিবারিক কলহের কারণে আবারও স্বামীকে নিয়ে তাকে আশ্রয় নিতে হয় নানির বাড়িতে। গত ১১ নভেম্বর তার একটি পুত্র সন্তান হয়।
এরপর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে যেতে হয় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গত ২৫ নভেম্বর তারা সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির বারান্দায় ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে শিশুটি হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার সোহাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।