রামপালে বেড়েছে আমন আবাদ, ভালো ফলনের আশা

জমিতে তীব্র লবণাক্ততা ও প্রতিকূল পরিবেশেও বাগেরহাটের রামপালে এবার আমন ধানের আবাদ বেড়েছে। লবণসহিষ্ণু জাত, উন্নত বীজ, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সঠিক বীজ নির্বাচন ও সেচ ব্যবস্থা সহজীকরণ আবাদ বৃদ্ধির মূল কারণ বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। 

রামপাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল আট হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে। তবে লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে প্রায় আট হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এই উপজেলায় জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার বিপরীতে উদ্বৃত্ত খাদ্য প্রায় দুই হাজার ৩৯১ মেট্রিক টান।

সিংগাড়বুনিয়া গ্রামের কৃষক মহিতুর রহমান জানান, আবহাওয়া অনুকূলে ও আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হওয়ায় আবাদ খুবই ভালো হয়েছে। তবে ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। ধান গাছ কেটে দিচ্ছে। 

বড়দিয়ার কৃষক মন্তাজ মোল্লা বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো। ধানে পোকা ধরেনি। আবহাওয়া এমন থাকলে ভালো ধান পাবো। 

আমনের ভালো ফলনের আশা রামপালের কৃষকদের
 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল বলেন, বিভিন্ন কারণে এ বছর আমনের আবাদ বেড়েছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো—গত আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের কারণে কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সব ইউনিয়নে আবাদ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। প্রণোদনা পুনর্বাসনের মাধ্যমে কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। লবণ সহিষ্ণু জাতের ধান ব্রি-৬৭ ও বিনা ধান ১০ জাত সরবরাহের বৃদ্ধি, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ওপর আস্থা বৃদ্ধি, সার, বীজ সঠিক সময়ে সরবরাহ, ন্যায্যমূল্য ও কৃষি যান্ত্রীকিকরণের ফলে আবাদ বেড়েছে। কৃষক যাতে বেশি করে ফলন বৃদ্ধি করতে পারেন সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হবে। 

গত অর্থবছরে আমনেরর আবাদ হয়েছিলো আট হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ২০০ হেক্টরে, যা গত বছরের চেয়ে ১১০ হেক্টর বেশি। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৪০ মেট্রিক টন। গত বছর উৎপাদন হয় ১৮ হাজার ১০৫ টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ফলন হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। 

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় মোট জনসংখ্যা এক লাখ ৮৮ হাজার ৩৭৪। মোট খাদ্য চাহিদা ৩৪ হাজার ৪৭৯ মেট্রিক টন। আর আমন ও বোরোর উৎপাদন মোট ৩৭ হাজার ৭৭৪ মেট্রিক টন। জনসংখ্যার অনুপাতে উদ্বৃত্ত খাদ্যের পরিমাণ দুই হাজার ৩৯১ মেট্রিক টান।