৩ মাস পানিবন্দি, অবশেষে ভেঙে পড়লো মসজিদটি

ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসের প্রভাবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে পানিবন্দি ছিল মসজিদটি। সাঁতরে গিয়ে আজান ও নামাজ পড়িয়েছেন ইমাম  হাফেজ মঈনুর রহমান। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে পরিচিতি পায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটি। তবে শেষ পর্যন্ত আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি, খোলপেটুয়া নদীর ক্লোজারে ভেঙে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে।

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মসজিদটি ভেঙে পড়ে। এর আগে ৫ অক্টোবর ভিডিও দেখে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাসিরউদ্দীন ওই এলাকায় ভাসমান মসজিদ তৈরি করে দিয়েছেন। যেখানে আপাতত ওই এলাকার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।

প্রতাপনগর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর থেকে এই এলাকার মানুষ খুবই কষ্টে আছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট সেটা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। নৌকা ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। এর আগে চারপাশে পানি থাকলেও হাওলদার বাড়ি জামে মসজিদটি টিকে ছিলে। নৌকায় করে গিয়ে মানুষ নামাজ আদায় করতো। কিন্তু আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিয়ে মসজিদটি খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের তোড়ে বিলীন হয়ে গেছে। এখন নৌকায় যে ভাসমান মসজিদ তৈরি করা হয়েছে সেখানেই নামাজ পড়তে হবে। এছাড়া তো উপায় নেই।’

mosque2

তিনি আরও বলেন, ‘দিন দিন এই উপকূলীয় এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। অনেক মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।’

মসজিদের ঈমাম হাফেজ মঈনুর রহমান বলেন, ‘এর আগে মসজিদটি টিকে ছিলে, নামাজও পড়তাম। আজ সকালে বিকট শব্দে ভেঙে পড়েছে। এখন ভাসমান মসজিদেই নামাজ পড়তে হবে।’

প্রতাপনগরের ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর ১০ মাস পানিতে ভেসে ছিল প্রতাপনগর। দুই মাস ভালো থাকার পর আঘাত হানে ইয়াস। সেই থেকে আজও আমার পুরো ইউনিয়নের মানুষ পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছি। নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না। পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যা তলা এলাকার বাঁধ ভেঙে এলাকার মধ্যে খাল হয়ে গেছে। অনেক মানুষের ঘরবাড়ি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে টিকে ছিলে হাওলাদার বাড়ি মসজিদটি। আজ সেটাও বিলীন হলো। অতিদ্রুত কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়ায় টেকসই বাঁধ দিতে না পারলে দেশের মানচিত্র থেকে প্রতাপনগর ইউনিয়ন হারিয়ে যাবে।’