বাল্কহেডডুবি: এখনও নিখোঁজ ৩, অভিযান স্থগিত করলো ডুবুরিরা

মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়া এলাকায় কয়লা বোঝাই বাল্কহেড ডুবির ঘটনায় দুজনের লাশ উদ্ধার করা হলেও এখনও তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ তিন জনের আশা ছেড়ে দিয়ে স্থানীয় ডুবুরিরা অভিযান স্থগিত করলেও লাশের সন্ধানে চালাচ্ছে কোস্টগার্ড। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বাল্কহেড উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করবে মালিক পক্ষ।

মোংলা থানার এসআই বিশ্বজিৎ মুখার্জি বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বিকালে ডুবন্ত বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুম থেকে গ্রিজার নুর ইসলাম ও সন্ধ্যায় সুকানি মহিউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করেছিলেন ডুবুরিরা।’

স্থানীয় ডুবুরি দলের প্রতিনিধি মো. আবুল কালাম বলেন, ‘দুজনের লাশ মঙ্গলবার বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ইঞ্জিন রুম ছাড়া বাল্কহেডের অন্য কোথাও ঢোকার কোনও সুযোগ নেই। কারণ বিদেশি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটির ব্রিজ ভেঙে দুমড়েমুচড়ে গেছে। ফলে সেখানে ঢুকে তল্লাশি চালানোর কোনও সুযোগ নেই। তাই উদ্ধার কাজ স্থগিত করেছে মালিক পক্ষ। এছাড়া বাকি তিন নিখোঁজের লাশ বাল্কহেডের ভেতরে আছে নাকি ভেসে গেছে তাও নিশ্চিত নয়।’

বাল্কহেড মালিক পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী এলাকার ফজলুল হক খোকন বলেন, ‘মানিক নামের এক ব্যক্তির কাছে বাল্কহেডটি ভাড়া দিয়েছিলাম। তার কাছে ভাড়ায় থাকা অবস্থাতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও বাল্কহেডটি উত্তোলনে ঢাকার সবচেয়ে বড় এবং দক্ষ ডুবুরি দল ভাড়া করা হয়েছে। আশা করছি, বৃহস্পতিবার থেকে কয়লা অপসারণের কাজ শুরু করতে পারবো।’

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন বলেন, ‘বাল্কহেড উত্তোলন ও উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য মালিক পক্ষ অনুমতি নিয়েছে। এখন তারা তাদের মতো কাজ করবে। বাল্কহেডডুবির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বাল্কহেড সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কোস্টগার্ড মোংলা জোনের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, নিখোঁজ তিন জনের লাশ উদ্ধারে কোস্টগার্ডের তৎপরতা সক্রিয় রয়েছে। ডুবুরিরা বুধবারও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় কোস্টগার্ডের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ার-৯ নম্বর বয়া এলাকার পশুর নদীতে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বিদেশি জাহাজ এমভি এলিনা বি-১ থেকে কয়লা বোঝাই করে ঢাকার মিরপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ফারদিন-১ নামক বাল্কহেডটি। বিপরীত দিক থেকে বন্দর ত্যাগ করার সময় বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি হ্যান্ডপার্কের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ফারদিন ডুবে যায়। এতে পাঁচ জন নিখোঁজ হন। এর মধ্যে দুজনের লাশ উদ্ধার হলেও তিন জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।