কুয়েট শিক্ষক সেলিমের মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের আবেদন পুলিশের

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেছে পুলিশ। গত ৪ ডিসেম্বর মহানগর হাকিম আদালতে এই আবেদন করা হয়।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনার পরই নিয়মিত রুটিন ওয়ার্কের আওতায় শিক্ষকের মৃত্যু ও সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরিস্থিতি অনুযায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মরদেহ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের জন্য ৪ ডিসেম্বর আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

এখনও আদালত থেকে কোনও ধরনের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বা মৃত শিক্ষকের পরিবার বা অন্য কারও কাছ থেকে কোনও ধরনের আবেদন থানায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত করা হয়নি বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করায় বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। এ নিয়ে কুয়েটের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের  জন্য বিষয়টি জিডিভুক্ত করা হয়েছে। এই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে খানজাহান আলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) শাহরিয়ার হাসানের ওপর তদন্ত দেওয়া হয়। যেহেতু সেলিম হোসেনের মরদেহ দাফন হয়ে গেছে, তাই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে আদালতের স্মরণাপন্ন হতে হয়। সে কারণে ওসি তদন্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ময়নাতদন্তের আবেদন করেছেন। অধ্যাপক সেলিমকে কুষ্টিয়াতে দাফন করা হয়েছে। তাই খুলনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি কুষ্টিয়ার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান লোকজন নিয়ে ৩০ নভেম্বর অধ্যাপক সেলিমের দাফতারিক কক্ষে ঢুকে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতন করেন। এর ফলে ওইদিন বিকাল ৩টায় মারা যান অধ্যাপক সেলিম।

অভিযোগে বলা হয়, সাধারণ সম্পাদক সেজানসহ উপস্থিত লোকজন তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডায়নিং ম্যানেজার নির্বাচন করার জন্য হল প্রাধ্যক্ষ ড. সেলিমকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে তাকে জেরা করেন। পরবর্তীতে ধরে নিয়ে সেলিমের ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা প্রায় আধাঘণ্টা ওই শিক্ষকের কক্ষে ছিলেন। পরে অধ্যাপক সেলিম দুপুরে খাবারের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাসায় যান। বেলা ২টার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন, তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।