সড়কের পাশে নষ্ট হচ্ছে চামড়া  

সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সাতক্ষীরার বিনেরপোতা-বাইপাস সড়কে পচে নষ্ট হচ্ছে চামড়া। এদিকে  সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসা ও এতিমখানার সামনেও পড়ে আছে কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া। জেলার অধিকাংশ জায়গায় দেখা মিলেনি ক্রেতার। অনেকে বাধ্য হয়ে চামড়া ফেলে দিচ্ছেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও চামড়া কিনে পড়েছেন বিপদে।

মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে চামড়া কিনতে অনীহা প্রকাশ করছেন স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ছাগলের চামড়া কিনতে অনীহা তাদের। তবে গরুর চামড়া প্রতি পিস ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রয় হয়েছে অনেক জায়গায়।

স্থানীয়রা বলেন, কোরবানি হওয়ার পর বাসাবাড়ি থেকে নিয়ে আসা ছাগলের চামড়ার ক্রেতা না পাওয়া তারউপর পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো লোকসানের মুখে পড়বে। আর ক্রেতা না পেলে অন্যবারের মতো এবারও চামড়া ফেলে দিতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।

সাতক্ষীরা জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নামমাত্র দামে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যারা কোরবানি দিয়েছেন এমন অনেককেই বিক্রি করতে গিয়ে দাম না পেয়ে চামড়া নিকটবর্তী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দিতেও দেখা গেছে।

সাতক্ষীরা পৌর এলাকার রাজার বাগান, মুন্সিপাড়া, মুনজিতপুর,  রইচপুর, বাঁকাল, সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর, মাছখোলাসহ  বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গরুর চামড়া প্রতি পিস ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে যেসব অঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ সেসব অঞ্চল থেকে পশুর চামড়া কিনতে অনীহা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর  ছাগল,-ভেড়ার চামড়া কিছু জায়গায় ৫-১০ টাকায় বিক্রি করলেও অধিকাংশ জায়গায় এখনও অবিক্রিত রয়েছে। সে কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে চামড়া ফেলে দিয়েছেন।

হাবিবুর রহমান নামে একজন নিজের ফেসবুকে লিখেছেন,ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সাতক্ষীরার বিনেরপোতা-বাইপাস সড়কে পচছে চামড়া। শোরুমে বা বাজারগুলোতে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী কিন্ত ঈদের সময় কোরবানির চামড়া নামমাত্র দামে কেনা হয়। ট্যানারি শিল্প প্রতিষ্ঠানেরা এ সময় ঠিক কি কারণে সিন্ডিকেট করে এতিম অসহায়দের হকের টাকাগুলোকে ভাগাড়ে দিয়ে দেয় বুঝে আসে না।

খানপুর ছিদ্দীকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন, ‘সারা দিনে কোরবানির প্রায় ৭৫টি ছাগলের চামড়া দান হিসেবে পেয়েছি। কেউ যদি প্রতি পিস চামড়ার দাম ৩-৪ টাকাও দিতো, বিক্রি করে দিতাম। গরুর চামড়ার ক্রেতা মিললেও, ছাগলের চামড়ার কোনও ক্রেতা নেই।’

শহরের রাজার বাগান এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী কুমারেশ দাশ বলেন, চামড়া কিনে এক প্রকার বিপদে পড়েছি। কাঁচা চামড়ার চাহিদা অনেক কম। খুব ভালো হলে গরুর চামড়া ৩৫০-৬৫০ টাকায় কিনছি। তবে এবার ভেড়া, ছাগলের চামড়া ক্রয় করছি না। তবে অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি চামড়ার দাম ভালো পাওয়া যাবে না। যে কিনেছি সেই দামে বিক্রি করতে না পারলে পথে বসতে হবে।