‘বিএনপি-জামায়াত দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানিয়েছিল, আবারও উসকানি দিচ্ছে’

যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘আপনারা বিএনপি-জামায়াতের মিষ্টি কথায় ভুলবেন না। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানি দিচ্ছে। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানিয়েছিল। দেশব্যাপী একসঙ্গে ৫০০-এর বেশি বোমা হামলা হয় তাদেরই সময়। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) রাতে যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়, স্টেডিয়ামপাড়া ও সার্কিট হাউসপাড়ায় শোক দিবসের ধারাবাহিক আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন। আলোচনা সভায় তার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সরকার দেশে কৃচ্ছতা সাধনে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সে কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, লোডশেডিং হচ্ছে। আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের উন্নয়ন হবে। জনগণের কষ্ট প্রধানমন্ত্রী বোঝেন। সে কারণে সামনের মাস থেকেই সরকার ওএমএস-এ ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশেও কমানো হবে।’

কাজী নাবিল বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন-তাইওয়ানে যুদ্ধ কারণে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্বে এখন মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ঠিক সেই সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী কৃচ্ছতা সাধনে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’

জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর জীবনী আলোচনাকালে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই উপমহাদেশের একমাত্র ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু যিনি সব প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বের কারণে ১৯৬৯ সালে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে মুক্ত করে ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘ছয় দফার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু যদি এক বা দুই দফা থেকে সরে আসতেন, তাহলে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু তিনি কখনোই তা করেননি। মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে তিনি কখনোই আপস করেননি। সে কারণে পাকিস্তান জান্তা তাকে বছরের পর বছর জেলখানায় বন্দি করে রাখে। লড়াই সংগ্রামের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় তিনি জাতির জনক হয়েছেন।’

নাবিল আহমেদ বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি ও তাদের দেশীয় এজেন্টদের ষড়যন্ত্রে জাতির জনক ও তার পরিবার নৃশংস খুনের শিকার হন। সারাবিশ্ব এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায়। বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে কলঙ্ক। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর সেই অপশক্তি বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করে। আমাদেরকে ভুল ইতিহাস শেখানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তার খুনিদের বিচারের আওতায় এনে দেশ ও জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। এখনও বঙ্গবন্ধুর কতিপয় খুনি লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছে।’ তাদের দেশে ফিরিয়ে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যে সময় দেশকে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে নিয়ে যাচ্ছি, ঠিক তখন দেশকে অস্থিতিশীল করতে সেই পরাজিত শক্তি নানামুখী ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশের মাটিতে বসে দেশকে সংঘাতে দিকে নিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলেছেন। তারা নানারকম উসকানি দিচ্ছে। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার শাসনামলেই নিরাপদ। সে কারণে আগামী ২০১৪ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।’

তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমাদের ভেতরে যেসব ছোট ছোট দ্বন্দ্ব আছে, সেগুলো ভুলে যশোরের উন্নয়নে সবাকেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমরা যেন শেখ হাসিনাকে যশোরের ছয়টি আসনই উপহার দিতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।’