২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ: শেষ কর্মদিবসে অবসর স্থগিত চিকিৎসকের

২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ ডা. হাসান আব্দুল্লাহর অবসর স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাসান আব্দুল্লাহ ও তার সহকর্মী মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) শেষ কর্মদিবসে হাসান আব্দুল্লাহর অবসর স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান। এই দুজনের বিরুদ্ধে ২২ লাখ ১৬ হাজার ৭২৩ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে বিধায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার টাকার হিসেবে গরমিলের তথ্য পায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে গত ১২ মার্চ সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আব্দুর রহিম মোড়লকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কমিটি তদন্ত শেষে আর্থিক গরমিলের প্রমাণ পেয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আব্দুর রহিম মোড়ল বলেন, ‌‘প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত সবার গাফিলতিতে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে ২২ লাখ টাকার অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে কমিটি ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।’

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে প্যাথলজি বিভাগের আয় ব্যয়ের অডিট করা হয়। অডিটররাও তাদের দেওয়া হিসাবে অডিট আপত্তি দাখিল করেন। এ কারণে ডা. হাসান আব্দুল্লাহর অবসর সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসান আব্দুল্লাহ পিআরএলে থাকলেও প্যাথলজি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আজ তার শেষ কর্মদিবস ছিল। তার ফেয়ারওয়েল নেওয়ার দিন থাকলেও অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। দুপুরের দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তার অবসর সুবিধা স্থগিতের নির্দেশনা জারি করেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির তদন্ত ও স্বাস্থ্য বিভাগের অডিটে ২২ লাখ ১৬ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। যে কারণে ডা. হাসান আব্দুল্লাহর অবসর সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার নামে ও প্যাথলজি বিভাগের মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় মামলার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।’

ডা. আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ‘আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দিলে ডা. হাসান আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অবসরজনিত বিধিনিষেধ থাকবে না।’

তিনি বলেন, ডা. হাসান আব্দুল্লাহ মঙ্গলবার ঢাকায় যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ দুপুরে তাকে হাসপাতালের আশপাশের ঘুরতে দেখা গেছে। যে কারণে প্যাথলজি বিভাগের দায়িত্ব এখনও নতুন কাউকে বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

জানতে চাইলে ডা. হাসান আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অবসরজনিত কোনও কাগজপত্র হাসপাতালে বা প্রশাসনে জমা দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘কাগজ-কলমে দায় দায়িত্ব আমার না। ২২ লাখ টাকা গরমিলের হিসাব তত্ত্বাবধায়ক ভালো বলতে পারবেন।’