ডুবে যাওয়া জাহাজের ৫০০ টন সার মিশলো পানিতে

বাগেরহাটে মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজের ৫০০ টন সার পানিতে মিশে গেছে। জাহাজটির মালিকপক্ষ জানিয়েছে, সার উত্তোলনের চেষ্টা করলেও কিছুই মেলেনি, সবটাই নদীতে তলিয়ে গেছে।

গত ২৫ জানুয়ারি রাতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শাহজালাল এক্সপ্রেস-২ নামের জাহাজটি ডুবে যায়। এতে কানাডা থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আমদানি করা ৫০০ টন সার ছিল। 

বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া সময়ে জাহাজটির উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে জাহাজটির মালিকপক্ষও এটি উদ্ধারে তৎপরতা চালায়। ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজের মালিক আজাহার সিদ্দিক বলেন, ‘লাইটার জাহাজ এবং জাহাজে থাকা সার উদ্ধারে নির্ধারিত সময়ের ১১ দিন পর মোংলা ও খুলনার ডুবুরি দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুরুতে তারা জাহাজের সার অপসারণের চেষ্টা চালায়। তবে কোনও সার পাওয়া যায়নি। পুরো সারই নদীতে তলিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাহাজটি উদ্ধার করার জন্য চট্টগ্রাম থেকে বিশেষ ধরনের নৌযান রওনা হয়েছে। ২০ দিনের মধ্যে এটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’

এদিকে সার নদীতে মিশে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্ভিদে পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ ঠেকাতে এই সার ব্যবহার করা হয়। এই সারে ৫০ ভাগ পটাসিয়াম থাকে। এতে জলজ সম্পদের ক্ষতিসহ পাশের সুন্দরবনের পরিবেশও নষ্ট হবে।’

এই সারের খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজের মালিক এস এম মোস্তাক মিঠু বলেন, ‘কানাডা থেকে এই সার আমদানি করছিল বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন। তবে দুর্ঘটনার কারণে এই সার নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি মোংলায় জাহাজটি ডুবে যায়। এখন জাহাজ উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।’

গত ২৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকায় সারবোঝাই জাহাজটি ডুবে যায়। জাহাজে নয় জন কর্মচারী ছিলেন। সবাইকে‌ জীবিত অবস্থায় উদ্ধার ক‌রে‌ কোস্টগার্ড প‌শ্চিম জোন।

মোংলা বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ৫০০ টন সার নিয়ে জাহাজ‌টি যশোরের নওয়াপাড়ার উদ্দেশে রওনা দি‌য়ে‌ছি‌ল। হারবাড়িয়া-৮ এলাকায় সুপ্রিম ভ্যালর নামের এক‌টি বিদেশি জাহাজকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে জাহাজটি। এ সময় ঘন কুয়াশায় লাইটার জাহাজটি বিদেশি ওই জাহাজকে ধাক্কা দেয়। এতে জাহাজটির নি‌চের অংশ ক্ষ‌তিগ্রস্ত হলে ইঞ্জিনরুমে পানি ঢুকে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে জাহাজের নয় কর্মচারী নদীতে ঝাঁপ‌ দেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ জানান, ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারে মালিকপক্ষকে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তবে এখনও এটি উদ্ধার করা যায়নি।