ইবি রাতভর ছাত্রীকে নির্যাতন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পর তদন্ত কমিটি গঠন করলো ছাত্রলীগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হলে এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল ও শাখা ছাত্রলীগ এসব তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে।

জানা গেছে, গত রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে নিয়ে রাত ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নবীন এক ছাত্রীকে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এই মারধরের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্ত ছাত্রী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। 

এতে আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

এদিকে, ওই ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর জনস্বার্থ মামলায় অভিযুক্তদের ওয়ারেন্ট চেয়ে চিট আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসীন বাদী হয়ে রিট আবেদন করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ফিন্যান্স ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুমকে বিবাদী করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এর শুনানি হবে।

এ ছাড়া ওই ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলন করে। এরপর তারা প্রেস বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেন। এতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তি চাই। এর সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত থাকলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ছাড়া এই ঘটনায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. আহসানুল হককে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে, ওই র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।