সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ায় সংগঠককে মারধর

যশোরের হরিহর নদ দখলবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক আল রোহানকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার ঝিকরগাছা উপজেলার দোস্তপুর গ্রামে নদ দখলকারী ১০-১৫ জন তাকে বেধড়ক মারধর করেন। আল রোহান বর্তমানে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ বলছে, এমন ঘটনা তাদের জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘হারিয়ে গেলো হরিহর নদ’ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশ হয়। তখন নদের জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডের অভিযোগ করেছেন আল রোহান।

এই নদ দখলমুক্ত করতে আল রোহান সরকারি বিভিন্ন দফতরে লিখিত আবেদন, নদের পাড়ে গোয়ালদহ বাজারে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন এবং নদ দখলের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য দেন। এসব কারণে গত শুক্রবার সকালে তার ওপর নদ দখলকারীরা হামলা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

হাসপাতালে ভর্তি আল রোহান জানান, নদ দখলমুক্ত করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে তিনি আন্দোলন করছেন। শুক্রবার সকালে গ্রামের চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় নদ দখলকারী ১৫-২০ জন তাকে ঘিরে ধরেন। এরপর কয়েকজন কিল, ঘুসি ও লাথি মারতে থাকেন।
হামলাকারীরা ও সময় বলতে থাকেন, “একে মারতে মারতে মেরে ফেল। যত টাকা খরচ হয়, সব খরচ করবো।”

খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তাসনিম মাহমুদ বলেন, ‘আল রোহানকে শুক্রবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার বুকে আঘাত লেগেছে। এক্স-রে করতে বলা হয়েছে। তবে, কালকের চেয়ে আজ তার অবস্থা ভালো। তিনি শঙ্কামুক্ত।’

জানতে চাইলে ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, কপোতাক্ষ নদ থেকে উৎপত্তি হয়ে খুলনার আপারভদ্রা, সর্বশেষ তেলিগাতিতে মিশে ছিল হরিহর। ৪৫ কিলোমিটার এই নদের বেশিরভাগ এখন দখল হয়ে গেছে। কেউ পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ, কেউ বালু তুলে বিক্রি করছেন। আবার অধিকাংশ স্থান ভরাট করে ফেলেছেন স্থানীয়রা। যেসব স্থান দখল হয়নি, বর্ষা মৌসুমে সেসব স্থানে অল্প পানি থাকে। তাতে থাকে না ঢেউ। শীতকালে পানি শুকিয়ে হাঁটুসমান হয়ে যায়। হেঁটে পার হওয়া যায়।