শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নির্যাতন ও স্কুল ড্রেস ছেঁড়ার অভিযোগ

যশোরের চৌগাছা ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক তসলিমুর রহমানের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির সাত শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।

তিনি মেয়েদের লাথি, চড়, থাপ্পড় মারা ছাড়াও দুজনের স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বলছেন, তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে হয়তো কারও ব্যথা লেগেছে। দু-একজনকে চড়-থাপ্পড় হয়তো দিয়েছি। কিন্তু কারও জামা ছিঁড়ে দেওয়ার মতো কাজ করিনি।

রবিবার (২০ আগস্ট) সকালে পৌর শহরের ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে প্রাত্যহিক সমাবেশের পর এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্কুল ছুটির পর বিকালে ওই সাত শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ দেওয়ার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, সহকারী শিক্ষক মাসুম কবীরসহ বিদ্যালয়ের পাঁচ-সাত জন নারী ও পুরুষ শিক্ষক এবং নির্যাতিত ছাত্রীদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে ছাত্রীরা জানায়, বিদ্যালয়ের সমাবেশ ক্লাসের সময় সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীরচর্চা) তসলিমুর রহমান ষষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে আমাদের সাত শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। শরীরের বিভিন্ন অংশে লাথি, স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে দেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সমাবেশে অংশগ্রহণ না করায় এমনটা করেছেন বলে দাবি করে ছাত্রীরা।

শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন রেখে বলছে, স্যার নিয়মিত সমাবেশ করান না। তাহলে কবে সমাবেশ হবে আর কবে হবে না, এটা আমরা কীভাবে বুঝবো? তিনি প্রাত্যহিক সমাবেশের জন্য বাঁশি না দিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঘুরে ঘুরে দেখেন কে সমাবেশে যায়নি। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার এবং শিক্ষক তসলিমুরের অপসারণ দাবিও করেছে তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীরচর্চা শিক্ষক তসলিমুর রহমান বলেন, অ্যাসেম্বলিতে অনেক সময় মেয়েরা যায় না। আমি দোতলায় গিয়ে তাদের ডাকি। আজ ওই মেয়েরা হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে কেউ কেউ পড়ে গেছে। দু-একজনকে হয়তো চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। কিন্তু লাথি বা জামা ছিঁড়ে দেওয়ার মতো কিছুই করিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। তাকে নিষেধ করলে উল্টো তিনি রুখে আসেন। এ কারণে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থীরা তাদের মারপিটের স্থান এবং স্কুল ড্রেসের ছেঁড়া অংশও দেখিয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মো. রফিকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।