সুন্দরবনের বাঘ গুনতে খরচ দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ৫ নভেম্বর থেকে ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র থেকে এই জরিপ শুরু হয়। চাঁদপাই এবং শরণখোলা রেঞ্জে ৩০০টি স্টেশনে দুটি করে ৬০০ ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে বাঘের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। 

পরে তা বিশ্লেষণ শেষে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হবে। গত জানুয়ারি মাসে সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে বাঘ গণনায় ক্যামেরা ট্রাপিং চলে। যা গত এপ্রিলে শেষ হয়। বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাঘ গণনার কাজে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফার এ ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। এ সময় খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের (খুলনা) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম, চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব ও করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবিরসহ বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

উপমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে। তাই সুন্দরবন সুরক্ষা করে বাঘ সংরক্ষণ করতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের জন্য যা যা করা দরকার আমরা করবো। তবে এক্ষেত্রে বনরক্ষী, সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।

বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহসিন বলেন, সুন্দরবনে বাঘের শিকার হওয়ার প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার। তাই সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাঘ গণনার বৈশ্বিক যে পদ্ধতি সেটা হলো ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বাঘের ঘনত্ব নির্ণয় করে সংখ্যা নির্ণয় করা হয়। বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারের চার হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘ গণনার কাজ চালানো হবে। ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের মুখমণ্ডল ও ডোরা কাটার ছাপ উঠে আসবে। এটা জটিল একটা পরিসংখ্যান কাজ। এ কাজ করেই বাঘের সংখ্যা বের করা হবে।

সুন্দরবনে ২০১৫ সালের প্রথম বাঘ জরিপে ১০৬টি বাঘ এবং ২০১৮ সালের জরিপে ১১৪টি বাঘের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।