খুলনায় হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি

খুলনায় নবজাতক চুরি হওয়ার পর জমজ অপর শিশুকে জড়িয়ে ধরে শোকাহত মাখুলনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে দুদিন বয়সী এক নবজাতক চুরি হয়েছে। শিশুটিকে নিয়ে মা’সহ স্বজনরা হাসপাতালের দোতলায় লেবার ওয়ার্ডে ঘুমিয়ে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম ভেঙে জমজ দুটি শিশুর একটিকে না পেয়ে তারা চিৎকার শুরু করেন। এ সময় চুরি যাওয়া শিশুটির বাবা ইদ্রিস আলী সেখানে উপস্থিত হাসপাতালের এক নার্সের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনার পর হাসপাতালের সেবা বন্ধ করে দেন নার্সরা। এদিকে, শিশু চুরির ঘটনা তদন্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি ও নার্সের ওপর হামলার খবর পাওয়ার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়।
শিশুটির বাবা খুলনার রূপসা উপজেলার নন্দনপুর এলাকার দিনমজুর ইদ্রিস আলী জানান, তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সানজিদা বেগমকে (২৪) গত ১৪ মার্চ খুলনা জেনারেল হাসপাতালে তার ভর্তি করা হয়। ১৫ মার্চ সকালে সিজারের মাধ্যমে সানজিদার জমজ ছেলে ও মেয়ে হয়। এরপর দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হাসপাতালের দোতলার লেবার ওয়ার্ডে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম ভেঙে ছেলে সন্তানটিকে আর দেখতে পাননি মা।

তিনি বলেন, হাসপাতালের প্রধান গেট নার্স যুথিকা ছাড়া কেউ খোলে না। যুথিকার সহায়তা ছাড়া অন্য কেউ সন্তানটিকে চুরি করতে পারে না।

চুরি হওয়া শিশুর মা সানজিদা বেগম বলেন, সিজার অপারেশনের পর যশোরের বাঘারপাড়া এলাকার একজন বয়স্ক মহিলা তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন।

বৃহস্পতিবার ভোরে ওই মহিলা তাকেসহ তার মা মোছা. রেবেকা এবং শাশুড়ি আকলিমা বেগমকে কোমল পানীয় খাওয়ায়। এরপর তারা তিনজনেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের ঘুম ভাঙে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। এ সময় তারা ছেলে সন্তানটিকে দেখতে পাননি।

নার্স যুথিকা বলেন, যাকে চোর সন্দেহ করা হচ্ছে সেই মহিলা সানজিদার সঙ্গেই থাকতেন। ওই মহিলাকে তাদের আত্মীয় মনে করেছিলাম। আগের দিন ওই মহিলা নবজাতকে নিয়ে রোদ পোহাতেও গেছেন। বৃহস্পতিবারও তেমনই ভাবছিলাম। কিন্তু ইদ্রিস তার ওপর অযথা হামলা করেন।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে সন্তান চুরির বিষয়টি উদ্বেগজনক। ঘটনা তদন্তে ডা. গোলক বিহারী স্বর্ণকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুজন হলেন ডা. রফিকুল ইসলাম ও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খুলনা সদর থানার কর্তব্যরত এসআই সিক্তা রানী রায় বলেন, শিশু চুরি ঘটনায় ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

/বিটি/ এএইচ/