আমাদের দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন কেন, ভারতের উদ্দেশে জামায়াত আমিরের প্রশ্ন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের হাতে ইজারা দিয়েছিলেন। তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন ভারতের সেবাদাসী।’

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘আপনারা শেখ হাসিনাকে বৈধভাবে না অবৈধভাবে আশ্রয় দিয়েছেন সেটি বিশ্ব দেখবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন কেন?’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে আগেই ভুলে গিয়েছিলেন। সর্বশেষ তার দলের নেতাকর্মীদের দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন। তাদের (আওয়ামী লীগের) উন্নয়ন ছিল মুখে মুখে। উন্নয়নের মহাসড়ক আর রোল মডেল দেশ নয় বরং উন্নয়ন হয়েছিল আওয়ামী লীগের। তারা দেশকে একটি কবরস্থানে পরিণত করেছিল। যেখানে মানুষের হাসি-কান্না দেখা যায় না। শুধু একটি গোষ্ঠী নয় বরং একটি পরিবারকে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।’

তিনি তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব গুম, খুন, হত্যা, গণহত্যা করা হয়েছে সব খুনের বিচার জনগণ চায়। সেনা হত্যা, আয়নাঘরের হত্যা, জামায়াত নেতাদের হত্যা সর্বশেষ ছাত্র-জনতাকে গণহত্যা সব হত্যার বিচার করতে হবে।’

এর আগে, সকাল সাড়ে ৭টায় জামায়াত আমির খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল মোড়ে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘যারা গণহত্যা করেছে তাদের এ দেশের রাজনীতি করার অধিকার নেই। জামায়াতে ইসলামী এ দেশে একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যে সমাজে খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতিসহ কোনও অনিয়ম থাকবে না।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদের সাজিয়েছে। সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তারা একটি সার্কাস পার্টি। সংসদে প্রতিমিনিটে লাখ লাখ টাকা খরচ করে জনগণের কথা না বলে গান গেয়েছে। তারা এমন রাজনীতি করেছে যে রাজনীতির কারণে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি পালানোর সময় মানুষ তাকে কলাপাতায় আবিষ্কার করেছে।’

এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সকলকে পথ চলার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘ওরা (আওয়ামী লীগ) যা করেছে আমরা তা করবো না।’ ফজরের পর থেকে শুরু হওয়া এ পথসভায় মুহূর্তের মধ্যেই জড়ো হয়েছিল হাজারো মানুষ।

পাইকগাছার সামবেশ ও আঠারোমাইলের পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল প্রমুখ।

পাইকগাছার সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা শাহীদুর রহমান ও আঠারোমাইলের পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মোক্তার হোসাইন।