তাজকিন আহমদকে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র হিসেবে ক্ষমতায়নের ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

সাবেক পৌর মেয়র মো. তাজকিন আহমদকে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র হিসেবে ক্ষমতায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব ও উপ-সচিবসহ মোট দুজনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (৭ মে) তাজকিন আহমদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া এবং বিধি বহির্ভূতভাবে পৌরসভার ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার সংলগ্ন জমিতে মার্কেট নির্মাণের দরপত্র আহ্বানসহ ১০ দফা অভিযোগ উল্লেখ করে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ কাউন্সিলর জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন। 

পরে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মতো তিনি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’-এর পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যধারা কেন নেওয়া হবে না মর্মে এই চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানান। 

২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদ কক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর–১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। 

পরে ওই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে রিট দায়ের করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে ২০২৩ সালে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গেজেট স্থগিত করে হাইকোর্ট। পাশাপাশি রুল জারি করা হয়। গেজেট চ্যালেঞ্জ করে তাজকিন আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। 

আইনজীবী জানান, মোট তিনটি গেজেট ইস্যু করা হয়। প্রথমটিতে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় প্যানেল মেয়রকে-১ প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং তৃতীয় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ৩৩(২) ধারা অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য সচিব নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এ তিনটি গেজেট তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। ফলে তাজকিন আহমেদের দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনও বাধা নেই। কিন্তু সে আদেশ পালন না করায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা উক্ত নোটিশ প্রেরণ করেছি।

প্রসঙ্গত তাজকিন আহমদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব।