বাড়ি ঘেরাও করে সাবেক মেয়রকে আটক করে পুলিশে দিলেন স্থানীয়রা

যশোরের কেশবপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়লকে (রফিক মোড়ল) ধরে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন। বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে কেশবপুর পৌরসভার ভোগতি নরেন্দ্রপুর (ভবানীপুর) এলাকায় তার বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তারা।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘেরাওকালে রফিক মোড়লের লোকজন যারা ঘেরাও করেছেন তাদের ওপর চড়াও হয়। ওই সময় সুযোগ বুঝে সাবেক মেয়র তার বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশেই তার ভাগ্নে মিলনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।

এদিকে, বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হন এবং তার গ্রেফতার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

খবর পেয়ে কেশবপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে স্থানীয়রা সাবেক মেয়র রফিক মোড়লকে পাকড়াও করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

তবে স্থানীয় একটি সূত্র জানায় রফিক মোড়ল দুপুরে বাড়ির পাশে তার মাছের ঘেরে ছিলেন। ওই সময় কয়েকজন তাকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করেন। তিনি দৌড়ে তার এক প্রতিবেশীর ঘরে লুকিয়ে পড়েন। ওই সময় তার লোকজন মাইকে ঘোষণা দেন, এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এরপর প্রতিবেশী নারী ও পুরুষরা ধাওয়াকারীদের ওপর চড়াও হন।‌ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন এসে সাবেক মেয়র যে বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন সেটি ঘেরাও ও স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা সাবেক মেয়রকে ঘর থেকে বের করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। সেই সময় উত্তেজিত দুই-একজন তাকে চড়-থাপ্পড় মারে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় থাকাকালে রফিক মোড়লের লোকজন এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঘের দখলসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে এ সংক্রান্তে মামলাও রয়েছে।

এই আসনের (যশোর -৬) সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন তিনি। গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

জানতে চাইলে কেশবপুর থানার ইন্সপেক্টর খান শরিফুল ইসলাম বলেন, বিকাল ৩টার দিকে সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়লকে ছাত্র-জনতা পাকড়াও করে পুলিশে সোপর্দ করে। বিকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।