ফুটবলার তাসলিমার বাবা

‘যা ঘটেছিল তা নিয়ে আমার আর কোনও দুঃখ নেই’ (ভিডিও)

তাসলিমার বাবা সবুজ মিয়া‘নির্যাতিত হওয়া’ নিয়ে আর কোনও দুঃখ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ময়মনসিংহের সাড়া জাগানো ফুটবলার তাসলিমার বাবা সবুজ মিয়া। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমি যতটুকু দুঃখ পেয়েছিলাম, বিচারের পর থেকে আমার আর কোনও দুঃখ নেই।’

তাসলিমা বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক। তার বাড়ি ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত কলসিন্দুর গ্রামে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর বেরোয়, স্কুলের এক সভায় তাসলিমার বাবাকে তার স্কুলের ক্রীড়াশিক্ষক জুবেদ আলী তালুকার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এ ঘটনায় বিচারের মাধ্যমে জুবেদ আলীকে স্কুল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

বিচারের পর তাসলিমার বাবা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘থানার নেতৃবৃন্দ সবাই এসেছিল। ওপর থেকে প্রচুর চাপ আসায় তারা এসেছিল। পরে আমি তাদের সঙ্গে গেছি। যাওয়ার পর আমার বক্তব্য নিয়ে তারা বিচার করেছেন। বিচারে যে ব্যক্তি অন্যায় করেছে, তাকে সাসপেন্ড করেছে। সেখানে দশজনে মিলে বিচার করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মধ্যেই কমবেশি গোলমাল সৃষ্টি হয়, মানুষ-ই সমাধান দেয়। মানুষ নিয়ে থাকতে হলে মানুষের কথা মানতে হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমি যতটুকু দুঃখ পেয়েছিলাম, গতকালের বিচারের পর থেকে আমার আর কোনও দুঃখ নেই। আমি সুখী। আমার অনুরোধ থাকলো, আমার দেশের যেন কোনও ক্ষতি না হয়, স্কুলের যেন ক্ষতি না হয়। আর মেয়েরা যে খেলে, তাদেরও যেন কোনও ক্ষতি না হয়। এ ব্যাপারে আমার মনে কোনও দুঃখ নেই।’

উল্লেখ্য, এবার এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মেয়েদের ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। এই দলের নয়জন—তাসলিমা, মাহমুদা, শামসুন্নাহার, শিউলি, নাজমা, মারিয়া, তহুরা, মার্জিয়া ও সানজিদা কলসিন্দুরের বাসিন্দা। তারা একই স্কুলের ছাত্রী।

গত ৮ সেপ্টেম্বর তাসলিমার বাবা সবুজ মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বুধবার (৭ সেপ্টম্বর) বিকালে কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চার শিক্ষক জুবেদ তালুকদার অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের নয় খেলোয়াড় ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে এক আলোচনা সভা করেন। সভায় ৪৫তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবল প্রতিযোগিতায় কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয়ের হয়ে জাতীয় দলের ৯ নারী ফুটবলারদের খেলতে বলেন। তবে  ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সংবর্ধনা ও সাফ ফুটবলের চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার ব্যস্ততা থাকার কারণে  তারা খেলার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে।এ ঘটনায়  জুবেদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং খেলোয়াড় ও অভিভাবকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এসময় উপস্থিত অভিবাবকদের সঙ্গে জুবেদ তালুকদারের কথা কাটাকাটি হয়।  পরে রাত ৯টায় কলসিন্দুর বাজার মহিলা মার্কেটে জুবেদ তালুকদার ও তার সহযোগীরা তাকে মারধর এবং হত্যার হুমকি দেয়।

এই ঘটনার সূত্র ধরে জুবেদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা হয় ও তাকে স্কুল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আরও পড়ুন- 

৩ শিশু সন্তানের কথাও ভাবেনি জঙ্গিরা
২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নেভেনি টঙ্গীর আগুন

/এআরএল/এফএস/