কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আদিবাসী ছাত্রীর মৃত্যুতে তদন্ত কমিটি

উখরা চিং মারমাত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কলাভবনের চারতলা থেকে পড়ে উখরা চিং মারমা নামে আদিবাসী এক ছাত্রী মারা গেছেন। রবিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর ড. অধ্যাপক জাহিদুল কবীরকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর প্রনব কুমার মণ্ডল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবেন। তদন্ত রিপোর্টে বের হয়ে আসবে এটি আত্মহত্যা, নাকি দুর্ঘটনা।
উখরা চিং মারমার লাশ হাসপাতালে হিমঘরে রাখা হয়েছে। সোমবার ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী রিপা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ পান তিনি। এ সময় সহপাঠীদের নিয়ে দৌড়ে গেলে উখরা চিংকে পড়ে থাকতে দেখেন। ক্যাম্পাসের কলাভবনের চারতলা থেকে সে পড়ে যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে তাকে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় কমিউনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল,বাংলাদেশ নামে বেসরকারি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিক্যালে। এখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উখরা। উখরার লাশ হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, প্রশাসনসহ শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে তার লাশ দেখতে আসেন।

এর আগে ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহিত উর রহমান, প্রক্টোর অধ্যাপক ড. জাহিদুল কবীর, অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। মারা যাওয়ার আগে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ পুলিশ কর্মকর্তারা হাসপাতালে এসে উখরার খোঁজ নেন।
এটি কি আত্মহত্যার চেষ্টা নাকি কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে এ ব্যাপারে উখরার সহপাঠীদের কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষের এই ছাত্রী ক্যাম্পাসের পাশেই একটি মেসে থাকতো। প্রায়ই অসুস্থ থাকতো। এর আগেও তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বলে জানায় সহপাঠীরা।

সহপাঠী রিপা জানায়, সে চুপচাপ থাকতো। উখরার মধ্যে হতাশাবোধ ছিল বলে দাবি করেছে ফেসবুক বন্ধুরা। হতাশাবোধ থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা কিংবা অসুস্থতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
/এআর/