নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় এখনও পুনঃতদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি

ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক মিনহাজ

 ত্রিশালে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ২ মাসের বেশি সময় পার হলেও পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েনি। নির্যাতনের শিকার হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা চলছে। দীর্ঘ দিনেও তদন্ত কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক সমাজ।

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক এসএম হাফিজুর রহমান জানান, জেল হাজতে যাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে কি কারণে তদন্ত কাজ শেষ করা যাচ্ছে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর মোবাইল ফোনে জানান, ঘটনার পর পরই পাঁচ সদেস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক কমিটি গঠিত না হওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম পুনঃতদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তিনি আরও জানান, কমিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে পত্র দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তারা কমিটিতে সদস্য হিসেবে কাউকে পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এছাড়া জেলা মানবাধিকার কমিশনের কাছেও একজনের নাম চাওয়া হয়েছে। তবে এখনও নাম পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।

জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান জানান, তদন্ত কমিটিতে নাম পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও চিঠি তারা পাননি। চিঠি পেলে নাম পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হবে। 

 

পূর্বে গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শামসুর রহমান জানান, বিধি মতো কমিটি গঠিত না হওয়ায় পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু দুই মাস চলে গেলেও  কমিটি গঠনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরে গিয়ে নানা ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে না বলে তিনি মানুষের কাছে বলছেন। দুই মাসেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কিত।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, খুব শিগগিরই কমিটি পুনঃগঠন করে তদন্ত কাজ শেষ করা হবে। 

উল্লেখ্য, গত ২ মে নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থী বিভাগীয় ডিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য বরাবর শিক্ষক মিনহাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে এবং ওই দিনই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক এএমএম শামসুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৩ মে ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: স্ত্রী-কন্যা হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড