জামালপুর শহরের পাদদেশে ঝিনাই নদীর পাড় ঘেঁষে কম্পপুর এলাকায় শেখ হাসিনা নকশিপল্লির জন্য ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট কাজের জন্য একনেকের সভায় এরইমধ্যে ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জামালপুরের নকশিকাঁথা নিয়েই শুধু শেখ হাসিনা নকশিপল্লি নয়, সারাদেশে যত ধরনের হস্তশিল্প আছে তার পাইকারি বাজার হবে এখানে। অন্তত ৩ হাজার ভবন নির্মাণ করা হবে এখানে। চারজন উদ্যোক্তার জন্য একটি করে কারখানা স্থাপনের জন্য ভবন বরাদ্দ থাকবে। তারা তাদের পণ্য তৈরি করবে সেই জায়গায়। এতে ১২ হাজার উদ্যোক্তার কারখানা থাকবে এখানে। তাদের জন্য থাকবে একটি বিশাল শপিংমল। সেই শপিংমলে প্রতিটি পণ্যের জন্য একটি বা দুটি করে শোরুম বরাদ্দ দেওয়া হবে।
জামালপুর শহরের মুসলিমাবাদ এলাকার একজন কারুশিল্পী জোৎস্না বেগম নকশিপল্লি প্রসঙ্গে বলেন, জামালপুরের নকশি পণ্যের মালিকরা যদি তাদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় তবে আমরাও শ্রমের মজুরি বেশি পাবো।
পৌরসভার তিরুথা গ্রামের সুচিশিল্পী শিউলি আক্তার বলেন, আমরা এতদিন ন্যায্য মজুরি পাইনি। নকশিপল্লিটি হলে ন্যায্য মজুরে পাবো। আমরা নিজেরাও পণ্য উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারবো।
জামালপুরের কারুনীলয় হ্যান্ডিক্র্যাফ্ট-এর মালিক আঞ্জুমান আরা খানম বলেন, এই পল্লিটি চালু হলে আমরা সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবো। এতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাইকারদের হয়রানির হাত থেকেও রক্ষা পাবো।
জামালপুর জেলা নকশি হস্তশিল্প মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, নকশিপল্লি নির্মাণ হলে নকশিকাঁথা শিল্প প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। পাশাপাশি একটি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তরা ন্যায্য মূল্যে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার সুযোগ পাবে। অপরদিক মানসমৃদ্ধ উৎপাদন হওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে জামালপুরের নকশি পণ্যের চাহিদা বাড়বে।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বলেন, জামালপুর শেখ হাসিনা নকশিপল্লির ভূমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাটের জন্য সম্প্রতি একনেক সভায় ৭২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বাস্তবায়িত হলে প্রকল্পটি জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে—এমনটাই বিশ্বাস এ অঞ্চলের মানুষের।