নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের অভিযোগ, আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

হাম-রুবেলা টিকা দেওয়ার সময় স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তারকে মারধরের অভিযোগে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার স্বরমশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরীফ আহম্মেদ বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগে আটপাড়া থানায় এ মামলা করেন। শেখ নূর মোহাম্মদ রূপচন্দ্রপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ইজ্জত আলী মাস্টারের ছেলে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, স্বরমশিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তারের রূপচন্দ্রপুর গ্রামের পূর্বপাড়া খাঁ বাড়িতে মঙ্গলবার হাম-রুবেলা টিকা দেওয়ার কথা ছিল। অন্যকাজে সুরাইয়া আক্তার ব্যস্ত থাকায় ওইদিন তিনি সেখানে যেতে পারেননি। পরদিন বুধবার সুরাইয়া রূপচন্দ্রপুর পূর্বপাড়া খাঁ বাড়িতে টিকা দিতে গেলে শেখ নূর মোহাম্মদ তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। সুরাইয়া এর প্রতিবাদ করায় নূর মোহাম্মদ উত্তেজিত হয়ে তাকে মারধর করেন। এসময় সুরাইয়ার সঙ্গে থাকা সহকারী ফয়জুর রহমান বাঁধা দিলে নূর মোহাম্মদ তাকেও মারধর করেন। স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া তাৎক্ষণিক বিষয়টি আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানিয়ে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মী সুরাইয়া আক্তার বলেন, আমি একজন মাঠ পর্যায়ের সরকারি নারী কর্মচারী। আমাকে লোকজনের সামনে নূর মোহাম্মদ শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরীফ আহম্মেদ জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার জন্য মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবায় বিঘ্ন ঘটবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে স্বরমশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ নূর মোহাম্মদের সঙ্গে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাফর ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ কে এম মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে আসামিকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।