গৌরীপুরে লাগেজ বোঝাই অজ্ঞাত লাশের হত্যারহস্যের উন্মোচন

গত বছরের ৯ নভেম্বরে জেলার গৌরীপুরের গঙ্গাশ্রম গ্রামের জোড়া ব্রিজের নিচ থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্দার করে পুলিশ। অবশেষে হত্যারহস্যের উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে সাংবাদিকদের হত্যারহস্য উন্মোচনের বিষয়টি জানানো হয়।

পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের মামলাটি তদন্তের জন্য ১৫ নভেম্বর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ভিকটিমকে শনাক্তের জন্য তার ছবি পোস্টারিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে উদ্ধার হওয়া লাগেজের সূত্র ধরে তদন্ত কাজ শুরু করে পিবিআই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম গত ২৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহ সদরের মধ্য বাড়েরার আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আবুল খায়ের মো. জাকির হোসেন সোহাগ (৪৪) ও তার স্ত্রী রিফাত জেসমিন জেসিকে (৩০) গ্রেফতার করেন। এই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অজ্ঞাত লাশের হত্যারহস্য বেরিয়ে আসে।

জাকিরগ্রেফতার হওয়া দম্পতি জানায়, উজান ঘাগড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সাবিনা (২০) তাদের ঘরের কাজ করতো। সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিতে সাবিনার ওপর তারা অত্যাচার চালাতো। বাবা-মায়ের সঙ্গে তার দেখা করা ও কথা বলার সুযোগও তারা বন্ধু করে দিয়েছিল। গত ৮ নভেম্বর শারীরিক নির্যাতনে প্রাণ হারায় সাবিনা। পরে জাকির ও তার স্ত্রী জেসি গৃহকর্মী সাবিনার মৃতদেহ লুকানোর পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী জাকির হোসেন ওইদিন সন্ধ্যা অনুমান ৬টার দিকে ফ্ল্যাটের স্টোররুম থেকে চটের বস্তা এবং তার মালিকানাধীন পাশের একটি নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট থেকে এমএসবি লেখা সম্বলিত পাঁচটি ইট সংগ্রহ করে। পরে প্রথমে বস্তার ভেতরে সাবিনার মৃতদেহ ও পাঁচটি ইট ভরে বস্তার মুখ বন্ধ করে লাশ ভর্তি বস্তাটি লাগেজে ঢোকানো হয়। জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী জেসি মিলে সাবিনার মৃতদেহ তাদের গাড়ির পেছনের ডালায় ভরে রাত অনুমান পৌনে ৯টার দিকে গৌরীপুর থানাধীন গঙ্গাশ্রম এলাকার জোড়া ব্রিজের নিচে পানিতে ফেলে দিয়ে আসেন।

গ্রেফতার আসামি জাকির ও তার স্ত্রী জেসিকে বৃহ্স্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে জাকির হোসেন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উম্মোচন হয় চাঞ্চল্যকর, ক্লুলেস লাগেজ বন্দি লাশের হত্যারহস্য।