পানির অভাবে পাট পচাতে পারছেন না চাষিরা

সোনালি আঁশ পাটের জেলা ময়মনসিংহে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা পাট কাটছেন। তবে পানির অভাবে পাট পচাতে পারছেন না। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

গফরগাঁওয়ের সালটিয়ার চাষি হুরমুজ আলী চলতি মৌসুমে তিন একর জমিতে পাট চাষ করেছেন। হাল চাষ, বীজ কেনা, সার ও শ্রমিক বাবদ প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পরিপক্ব হওয়ায় কৃষিশ্রমিক দিয়ে কাটতে শুরু করেছেন পাট। ফলন বাম্পার হওয়ায় আশা করছেন ৬০ মণ পাট ঘরে তুলতে পারবেন। দাম ভালো পেলে খরচ বাদে ৫০ হাজার টাকার ওপরে লাভ হবে। কিন্তু পাট কাটার পর ক্ষেতে কিংবা ডোবায় পানি না থাকায় পচাতে পারছেন না তিনি।

হুরমুজ আলী বলেন, পাট আবাদে খরচ কম; লাভ বেশি। এ কারণে তিন একর জমিতে পাট চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। ক্ষেতের অর্ধেক পাট কেটে রাস্তার ওপরে রেখেছি। পানি না থাকায় পচাতে পারছি না। সময়মতো পচাতে না পারলে পাটের মান ভালো হবে না এবং ন্যায্য দাম পাবো না। কীভাবে পাট পচাবো এ নিয়ে চিন্তায় আছি।

mymensingh jute-2শুধু হুরমুজ আলী নন, জেলার অধিকাংশ পাট চাষির একই অবস্থা। মুক্তাগাছার তারাটি খামারবাজার এলাকার সবুর মিয়া বলেন, আগে তো বাড়ির আশপাশে ডোবায় পানি জমে থাকতো। জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আর পতিত ডোবা-নালা খালি নেই। এ কারণে পানির অভাবে পাট পচাতে পারছি না। এই এলাকার সব চাষি পানির অভাবে পাট পচাতে পারছেন না।

ফুলপুরের মোতালেব ফকির বলেন, এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছে। চাষিরা দাম ভালো পাবেন। তবে পানির সমস্যা চাষিদের চিন্তায় ফেলেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পচাতে না পারলে পাটের মান ভালো হয় না। তখন পাটের চাহিদা কমে দামও কমে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় পাঁচ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৪০ বেল্ট।

ময়মনসিংহ খামারবাড়ির উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মতিউজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে। চাষিরা পাট কাটতে শুরু করেছেন। কিছু এলাকায় পানির সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। তবে পাট কিছুদিন কেটে ক্ষেতে ফেলে রাখলে তেমন সমস্যা হয় না। বর্ষাকাল চলছে। পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।