চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পেয়ে খুশি আনারস চাষিরা। লাভজনক হওয়ায় জেলায় আনারস চাষির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় সন্তোষপুর, কৃষ্টপুর ও রাঙ্গামাটিয়া মৌজায় এক হাজার ৬৭৬ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে আনারস চাষ করা হয়।
সন্তোষপুর মৌজার চাষি আইয়ুব আলী চলতি মৌসুমে দুটি বাগানে ১০ একর জমিতে আনারস বাগানের আবাদ করেছিলেন। দুই বাগান থেকে তিনি এ পর্যন্ত এক লাখ আনারস বিক্রি করেছেন। প্রতি পিস আনারস তিনি গড়ে ২৭ টাকা পাইকারি দরে বাগান থেকে বিক্রি করে পেয়েছেন ২৭ লাখ টাকা। প্রতিটি আনারস আবাদে তার খরচ হয়েছিল গড়ে ১০ টাকা। সেই হিসাবে চাষি আইয়ুব আলীর খরচ বাদে লাভ হয়েছে ১৭ লাখ টাকা।
আইয়ুব জানান, বাংলা কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বাগানে আনারসের চারা রোপণ করতে হয়। এক বছরের মাথায় আনারসের ফলন আসতে থাকে এবং দেড় বছরের মাথায় বাগানের সব আনারস বিক্রি করে শেষ করা হয়। দেড় বছরের বাগানে তিন ধাপে সার প্রয়োগ করতে হয়। এর মধ্যে ইউরিয়া, পটাশ টিএসপি, জিপসাম ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফলন আসার আগ পর্যন্ত প্রতিটি আনারস উৎপাদনে গড়ে ১০ টাকার মতো খরচ পড়ে। খরচ বাদে লাভের অংক খুব ভালো থাকে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার দুই বাগানে দুই লাখ চারা রোপণ করা আছে। আনারসের ফলন আসতে শুরু করেছে। আগামী পৌষ মাস থেকে আনারস বিক্রি করা যাবে। এবার ফলনও ভালো হবে। বর্তমানে বাগানে যেভাবে ফলন এসেছে তাতে খরচ বাদে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা লাভ হওয়ার আশা করছেন তিনি।
রাঙ্গামাটিয়া এলাকার চাষি কামরুল বলেন, ‘ফুলবাড়ীয়ার আনারস বেশ সুস্বাদু হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখানকার আনারস ময়মনসিংহের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।’
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মতিউজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফুলবাড়িয়া উপজেলার মাটি আনারস চাষের জন্য উপযোগী। ফলন ভালো হয় এবং দাম বেশি পাওয়ায় এখানকার চাষিরা আনারস চাষে দিনদিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’ ফুলবাড়ীয়ার চাষিরা সম্পূর্ণ কীটনাশকমুক্ত আনারস চাষ করছে বলে জানান তিনি।