ধর্মঘটে ভালো নেই পরিবহন শ্রমিকরা

ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সারাদেশের মতো ময়মনসিংহেও তৃতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারণে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের উদ্দেশ্যে কোনও দূরপাল্লার যান ছেড়ে যায়নি। এ অবস্থায় কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। 

এনা পরিবহনের সুপারভাইজার রনি মিয়া স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন ময়মনসিংহ মহানগরীর নয়াপাড়ার ভাড়া বাসায়। এনা পরিবহন থেকে পাওয়া আয় দিয়েই চলে তার বাসা ভাড়াসহ সংসারের খরচ। তিন দিন ধরে ধর্মঘটের কারণে এনা পরিবহন বন্ধ। এ অবস্থায় আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। হাতে জমানো টাকা তিন দিনে শেষ হয়ে গেছে। এখন কীভাবে সংসার চলবে, এই নিয়েই যত চিন্তা রনির। 

তিনি বলেন, প্রতিদিনের আয়-রোজগার দিয়ে সংসার এবং দুই ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চলছে। কাজ না থাকায় গত তিন দিনের কোনও আয়-রোজগার হয় নাই। হাতে যা টাকা ছিল সব খরচ হয়ে গেছে। এখন যদি বাস চলাচল শুরু না হয়, তাহলে ধার করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

সৌখিন পরিবহনের চালকের সহকারী বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা শ্রমিকরা দিন আনি দিন খাই মানুষ। আমরা কেউ তেমন একটা টাকা জমাতে পারি না। হঠাৎ করে বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একেবারে বেকার হয়ে পড়েছি। ক্ষোভ প্রকাশ করে বাচ্চু মিয়া আরও বলেন, মালিকরা বাস বন্ধ করে ঘরে বসে আছে। পরিবহন নেতারাও শ্রমিকদের কোনও খোঁজ খবর নিচ্ছেন না। কতদিন ধর্মঘট থাকবে আর আমাদের কীভাবে সংসার চলবে, এই নিয়ে শ্রমিকরা দিশেহারা।

ময়মনসিংহ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইখতিয়ার আহমেদ রনি বলেন, জেলায় প্রায় ২৫ হাজার পরিবহন শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে কার্ডধারী শ্রমিকের সংখ্যা ১৫ হাজার। শ্রমিকরা কাজ করলে মজুরি পায়, কাজ না করলে কোনও মজুরি নাই। ধর্মঘটের কারণে শ্রমিকরা খুব কষ্টে আছে। এ বিষয়ে মালিকদের কাছে বারবার কথা বলেও কোনও কাজ হয়নি বলে জানান তিনি।

এদিকে জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শ্রমিকরা দিন আনে দিন খায়। যা আয় করে তাই তারা খরচ করে ফেলে। ভবিষ্যতের জন্য তেমন একটা জমাতে পারে না। শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে দ্রুতই সমস্যার সমাধানে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।