একই সেক্টরে যুদ্ধ করা ২ বীর প্রতীকের একই দিনে মৃত্যু

একই দিনে মারা গেলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে একই সেক্টরে বীরত্বের সঙ্গে লড়া দুই বীর প্রতীক। তারা হলেন- বীর প্রতীক মতিউর রহমান ও সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল। তারা দুজনই মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন।

রবিবার (২২ মে) দুপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মতিউর রহমান। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল।

মতিউর রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা মিস্টার জানান, তার বাবা ধানুয়া কামালপুর ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং যুদ্ধের সময় মারাত্মকভাবে আহত হন। বীরত্বের কারণে তাকে বীর প্রতীক খেতাব দেওয়া হয়। বকশীগঞ্জ উপজেলার চার বীর প্রতীকের মধ্যে তিনি একজন।

এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সোমবার (২৩ মে) সকাল ৯টায় জানাজা শেষে ধানুয়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে, তিন মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

এদিকে, সৈয়দ সদরুজ্জামান ১৯৫০ সালের ৩০ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সৈয়দ বদরুজ্জামান ও সৈয়দা খোদেজা জামান দম্পতির সন্তান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দুরমুঠ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের জামালপুর মহকুমা শাখার জ্যেষ্ঠ সভাপতি ছিলেন।

জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১নং সেক্টরের জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জের কামালপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মোট ১৮ বার পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণ করেছিলেন। এর মধ্যে তিনি ১৪ বার অংশগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল হেলাল। এই নামানুসারে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই কোম্পানির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘হেলাল কোম্পানি’। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য সেখান থেকে মোট সাত জন খেতাব পেয়েছিলেন।

রবিবার আছরের নামাজের পর জামালপুর নতুন হাইস্কুল মাঠে সদরুজ্জামানের প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। নিজ বাড়ি মেলান্দহের দুরমুঠ মিয়াবাড়ি মাঠে সোমবার সকাল ১০টায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।